বদেশ্বরী মহাপীঠ মন্দির | Bodeshshori Mahapith Temple 22/01/2022


PC:


হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের কদর খানিকটা বেশি। অবকাঠামোগত সৌন্দর্য্য ও সনাতন ধর্মের ঐতিহ্যের কারণে মানুষের গুরুত্বের বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বদেশ্বরী মহাপীঠ মন্দির (Bodeshshori Mahapith Temple)। কথিত আছে ৪শ’ বছরের পুরনো এ মন্দিরে রয়েছে রাজা দক্ষের কন্যা ও ভোলানাথ শিবের স্ত্রী সতীর বাম পায়ের গোড়ালির অংশ। আর তাই সানতন ধর্মের মানুষের কাছে স্থানটি পূজনীয়।

 

হিন্দুধর্মের ১৮টি পুরাণের স্কন্দ পুরাণ মতে, রাজা দক্ষ একটি যজ্ঞানুষ্ঠান করেছিলেন। ভোলানাথ শিব রাজা দশরথের জামাই ছিলেন। রাজা দশরথ শিবকে জামাই হিসেবে মানতে পারেন নি। কারণ, মহাবীর শিব সর্বদাই ছিলেন উদাসীন এবং নেশাগ্রস্থ ও ধ্যানগ্রস্থ। উক্ত যজ্ঞানুষ্ঠানে মুনিঋণিগণ ও দেবদেবতাগণ নিমন্ত্রিত হলেও রাজা দশরথের জামাই তথা দেবী দুর্গা (পার্বতী/মহামায়া)-র স্বামী ভোলানাথ শিব নিমন্ত্রিত ছিলেন না। এ কথা শিবের সহধর্মিনী জানামাত্রই ক্ষোভে যজ্ঞে আত্মাহুতি দেন। শিব তাঁর সহধর্মিনীর মৃত্যুযন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে উন্মাদ হয়ে তাঁর সহধর্মিনীর শবদেহ কাঁধে নিয়ে পৃথিবীর সবখানে উন্মাদের মত ঘুরতে থাকেন এবং প্রলয়ের সৃষ্টি করেন। সে মুহূর্তে স্বর্গের রাজা বিষ্ণুদেব তা সহ্য করতে না পেরে স্বর্গ হতে একটি দুদর্শনচক্র নিক্ষেপ করেন। চক্রের স্পর্শে শবদেহটি ৫১টি খণ্ডে বিভক্ত হয়। বাংলাদেশে পড়ে এর ২টি খণ্ড। একটি চট্রগামের সীতাকুণ্ড এবং অপরটি পঞ্চগড় জেলার বদেশ্বরীতে। মহামায়ার খণ্ডিত অংশ যেখানে পড়েছে তাকে পীঠ বলা হয়। বদেশ্বরী মহাপীঠ এরই একটি। উক্ত মন্দিরের নাম অনুযায়ী বোদা উপজেলার নামকরণ করা হয়েছে।

 

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বোদা অঞ্চল ছিল বৌদ্ধ ও হিন্দু ব্রাহ্মণ অধ্যুষিত জনপদ। খ্রীস্টীয় দ্বিতীয়-তৃতীয় শতকে পঞ্চগড়সহ সমগ্র উত্তর বঙ্গ মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল। বগুড়ার মহাস্থানগড়ে প্রাপ্ত ওই সময়কার শিলালিপি এবং ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিব্বত অভিযানে ব্যর্থ ইখতিয়ারউদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি অহমিয়া দস্যুদের আক্রমণের ভয়ে তুর্কী ঘোড়সওয়ার বাহিনী নিয়ে বদেশ্বরীর কাছ দিয়ে প্রবাহিত খরস্রোতা করতোয়া নদী পাড়ি দিয়ে নেকমদের দিকে রওনা কালে সাঁতারে অনভ্যস্ত তুর্কী বাহিনীর অনেক ঘোড়সওয়ার ঘোড়সহ ডুবে মারা যায় । নদী পেরোতে গিয়ে ঘোড়াসহ সৈন্য মারা পড়ায় বড়শশী ইউনিয়নের করতোয়া নদীর ওই ঘাটটি এখন ‘ঘোড়ামারা ঘাট’ বা ‘ঘোড়াঘাট’ নামে পরিচিত। বেঁচে যাওয়া অবশিষ্ট সৈন্য নিয়ে অহম দস্যুদের ভয়ে খিলজি করতোয়া তীরের জঙ্গলে একটি ভাঙা মন্দিরে আশ্রয় নেন । পরে তিনি দেখতে পান, আশ্রয়স্থলটি ছিল একটি ভাঙা দুর্গ। সেটি বদেশ্বরী মন্দির ।পাল রাজারা মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বদেশ্বরীতে নির্মাণ করেন দুর্গ । পরে এ মন্দিরের অনেকবার সংস্কার করা হয়েছে।

 

কিভাবে যাবেন?

তেতুলিয়া থেকে স্থানীয় যানবানহন যোগে বদেশ্বরী মন্দির যাওয়া যায়।

 

কোথায় থাকবেন?

রাত্রি যাপনের জন্য পঞ্চগড়ে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল পাবেন। এই সব হোটেলের ধরন অনুযায়ী ২০০ থেকে ১০০০ টাকা ভাড়ায় থাকতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

পঞ্চগড় শহরে খাবার জন্য বিভিন্ন মানের হোটেল পাবেন তবে মৌচাক হোটেলের খাবার খেয়ে দেখতে পারেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?