গোলকধাম মন্দির | Golokdham Temple 22/01/2022


PC:


পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাংগা ইউনিয়নে অবস্থিত অষ্টাদশ শতকের চমৎকার একটি নিদর্শনের নাম গোলকধাম মন্দির ((Golokdham Temple)। ১৮৪৬ সালে গোলককৃষ্ণ গোস্বামীর স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মিত প্রাচীন এই মন্দিরের স্থাপত্য নজরে পড়ার মত। চারপাশে গাছ-গাছালী দিয়ে ঘেরা গ্রীক পদ্ধতিতে নির্মিত ছয়কোণাকৃতির গোলকধাম মন্দির একটু উঁচু প্ল্যাটফর্মের উপর স্থাপিত।

 

মন্দিরের ভেতরে কোন জাঁকজমকের ছাপ নেই। মন্দিরের ভেতরের একটি ঘর চার কোণাকার। ঘরের ছাদ কাঠের বীম দিয়ে তৈরি। মন্দিরটির ছয়টি কোণে মোট ছয়টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। প্রবেশদ্বারগুলো খিলান আকৃতির। খিলানের উপরের অংশে রয়েছে ফুল,পাতা ও পাখির নকশা। গোলকধাম মন্দিরের নির্মাণশৈলীতে প্রাচীন গ্রীসের স্থাপত্যশিল্পের ছাপ পাওয়া যায়। মন্দিরের প্রতিটি দরজার বাম ও ডানদিকে দুটো করে করিন্থিয়ান কলাম আছে। এধরনের কলাম প্রাচীন গ্রীসের মন্দিরগুলোতে দেখা যেত। করিন্থিয়ান কলামগুলোর ওপরের অংশে ফুল ও মুখায়বের নকশা আছে। প্রতি দুই দরজার করিন্থিয়াম কলামের মাঝে রয়েছে একটি করে খাঁজ বিশিষ্ট কলাম। মন্দিরের উপরে একটি নামের ফলক আছে। নামের ফলকের দু-পাশে একটি করে হাতির মুখায়বের নকশা রয়েছে।

 

মন্দিরের প্রধান তলার উপরে আরও দুটো তলার মত গঠন দেখা যায়। মন্দিরটি যেন ইট, পাথর ও কাঠের স্থাপনার মেলবন্ধন। পুরো মন্দিরের পরতে পরতে রয়েছে রুচিশীলতার ছাপ। মন্দিরের সবচেয়ে উপরের তলায় রয়েছে ৫টি চূড়া। মাঝের চূড়াটি সবচেয়ে বড়, বাকিগুলো ছোট। প্রতিটি চূড়ার নিচের অংশে রয়েছে ৪টি করে সরু দরজা। বলাই বাহুল্য, এই সরু দরজাগুলোতেও ফুল ও নানা নকশা রয়েছে।

 

দীর্ঘ সময়জুড়ে এই মন্দির অবহেলায় পড়ে ছিল। পরবর্তীতে ২,০০০ সালে এই মন্দিরকে প্রত্নতাত্ত্বিক তালিকায় যুক্ত করা হয়। এছাড়া একটি তুলসী মঞ্চে ভেঙ্গে গিয়েছিল। যা ইতোমধ্যেই সংস্কার করা হয়েছে। এছাড়া মন্দিরের মূল রাস্তার সামনে রয়েছে একটি কুয়া। সংস্কারের অভাবে এখন এটি ব্যবহারযোগ্য নয়। প্রত্নতাত্ত্বিক এই মন্দিরকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে সংস্কার কাজ এখন একটি দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অতীতে এ মন্দিরে রাধাকৃষ্ণের পূজা করা হতো। বর্তমানে স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্যোগে শ্রী কৃষ্ণের পূজা করা হয়।

 

কিভাবে যাবেন?

পঞ্চগড় থেকে লোকাল বাসে দেবীগঞ্জ হয়ে রিক্সা/ইজিবাইক নিয়ে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত গোলকধাম মন্দির পরিদর্শনে যেতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

পঞ্চগড় শহরে রাত্রিযাপনের জন্য আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল মৌচাক, হোটেল রাজ নগর, হিলটন বোর্ডিং, রোকখানা বোর্ডিং, হোটেল প্রীতম, হোটেল এইচ কে প্যালেস ও হোটেল ইসলাম উল্লেখযোগ্য।

 

কোথায় খাবেন?

দেবীগঞ্জের বাবুপাড়ায় বেশকিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়া পঞ্চগড় শহরে হোটেল করোটিয়া, হোটেল মৌচাক, হোটেল নিরিবিলি, হোটেল হাইওয়ে ও হোটেল হামজার মতো ভালমানের খাবার হোটেল খুঁজে পাবেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?