ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ নওগাঁর জনপদে অবস্থিত রাজপ্রাসাদগুলো ধ্বংসের মুখে পতিত হওয়া সত্ত্বেও আজো এগুলো আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি, নওগাঁ শহর হতে প্রায় ৬ কিলোমিটার দক্ষিণে দুইশত বছরের পুরাতন স্থাপনা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুবলহাটি জমিদার বাড়ী (Dubolhati Palace)। অনেকে একে দুবলহাটি রাজবাড়ী নামেও অভিহিত করে থাকেন।
১৭৯৩ সালে রাজা কৃষ্ণনাথ এই অঞ্চলটিতে শাসনকার্য শুরু করেন। তিনি তৎকালীন বৃটিশ লর্ড কর্নওয়ালিসের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৪ শত ৯৫ টাকায় জায়গাটি কিনেছিলেন। রাজা কৃষ্ণনাথের কোনো সন্তান বেঁচে না থাকায় তার নাতি রাজা হরনাথ রায় ১৮৫৩ সালে সেখানকার দায়িত্বভার গ্রহন করেন। হরনাথ রায় চৌধুরী ও তার পুত্র কৃঙ্করীনাথ রায় চৌধুরীর সময় এর ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়। প্রাসাদের বাইরে ছিল দীঘি, মন্দির, দাতব্য চিকিৎসালয়, ১৬ চাকার রথসহ বিভিন্ন স্থাপনা। দুবলহাটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে তিনি বিভিন্ন নাট্যশালা এবং স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করেন, প্রাসাদের পাশ্ববর্তী অঞ্চলে সাধারন মানুষদের পানির চাহিদা পূরন করতে পুকুর খনন করেন। ১৮৬৪ সালে জমিদার পরিবারের উদ্দ্যোগে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে বিদ্যালয়টির নামকরন রাজা হরনাথের নামে করা হয়। জমিদারি প্রথার উচ্ছেদের পর রাজা হরনাথ ভারতে চলে যান।
দুবলহাটি রাজপ্রাসাদটি মোট সাতটি আঙ্গিনা ও সাড়ে তিনশ’ ঘর নিয়ে গঠিত, যা কালের বিবর্তনে আজ লুপ্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। এর ভিতরের দালানগুলো তিন থেকে চার তলা বিশিষ্ট। রাজা রাজেশ্বরী নামে সেখানে একটি মন্দির রয়েছে যেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালানো হতো। প্রাসাদের ভিতরে এখনো একটি কূপ রয়েছে। লোকজনকে আনন্দ দানের জন্য গোবিন্দ পুকুরের পাশেই গান বাড়ি নামক একটি ঐতিহ্যবাহী দালান ছিলো যেখানে বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীতসাধনা করা হতো। গান বাড়ির শেষ সীমান্তে একটি কালি মন্দির ছিল যেটি বর্তমানে আগাছায় ভরপুর। কালি মন্দির থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে রাজার বাগান বাড়ি ছিল।
প্রাসাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত দালানকোঠাগুলো ইঙ্গিত করে যে দুবলহাটি সাম্রাজ্য পূর্ববর্তী যুগ কতটা সমৃদ্ধশালী ছিলো। রাজ্যটির সম্প্রসারনে এই পরিবারটির বিশাল প্রভাব ছিল। বলা হয়ে থাকে যে, দুবলহাটির জমিদারি রাজবংশের জগতারন একজন লবন ব্যবসায়ী ছিলেন যিনি দুবলহাটির পাশের গ্রামে ব্যবসার জন্য এসেছিলেন এবং বিল অঞ্চল লিজ নিতে শুরু করেছিলেন। ধীরে ধীরে তারা অনেক জমির মালিক হন। মোঘলরা হরনাথ রায় চৌধুরীকে ‘রাজা’ এবং তার পূর্বপুরুষদের ‘জমিদার’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। এ রাজবাড়ি থেকেই তৎকালীন সিলেট, দিনাজপুর, পাবনা, বগুড়া, রংপুর ও ভারতের কিছু অংশের জমিদারি পরিচালিত হতো। বর্তমানে এটি সরকারি সম্পদ হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের অধীনস্থ।
কিভাবে যাবেন?
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাস কিংবা ট্রেনে নওগাঁ/শান্তাহার বা নাটোর এসে পরে আত্রাই আসতে পারেন। নাটোর থেকে আত্রাই বাস, ট্রেন ও নদীপথে নৌকায় আত্রাই আসা যায়। ঢাকা থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, আল নাফি ইত্যাদি বাস নওগাঁর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। আত্রাই থেকে দুবলহাটি রাজবাড়ী যেতে হবে নসিমনে চড়ে।