ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
জগদ্দল মহাবিহার বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার ধামুরহাট উপজেলার একটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। এটি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং মঙ্গলবাড়ি থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমানে স্থানীয় জনগণ এটিকে বটকৃষ্ণ রায় নামক এক জন জমিদারের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ বলে মনে করে।
মূলত জগদ্দল মহাবিহার ( Jagaddala Mahavihara) ১১শ থেকে ১২শ শতাব্দীর দিকে প্রতিষ্ঠিত একটি বৌদ্ধ বিহার ও শিক্ষা কেন্দ্র। ইতিহাস থেকে জানা যায়, রাজা রামপাল গৌড় রাজ্য পুনরুদ্ধারের পর রামাবতী নগরে রাজধানী স্থাপন করেন। আইন-ই-আকবর রচয়িতা আবুল ফজল এ স্থানটিকে রমৌতি বলে উল্লেখ করেছেন। প্রাচীন বাংলার ধর্মমঙ্গল কাব্যগুলিতে এবং রাজা রামপালের পুত্র মদনপালের তাম্র শাসনেও রামাবতীর উল্লেখ আছে। ঐতিহাসিক সূত্র মতে, একাদশ শতকে রাজা রামপাল ভীমকে পরাজিত করে প্রিয় পিতৃভূমি বরেন্দ্র উদ্ধার করে প্রজা সাধারণের জন্য পাহারপুরের কাছে রাজধানী রামাবতী ও শিক্ষা বিস্তারের জন্য জগদ্দল মহাবিহার (বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করেন। ঐতিহাসিক রামপ্রাণগুপ্ত জগদ্দল বিহার দিনাজপুরে অবস্থিত বলে উল্লেখ করেছেন। কারণ পূর্বে নওগাঁ জেলা দিনাজপুর জেলার অংশ ছিল। একাদশ বা দ্বাদশ শতাব্দীতে রাজা রামপাল এই মন্দির নির্মাণ করেন বলে নীহাররঞ্জন রায়ের বাঙ্গালীর ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ আছে। এ গ্রন্থে আরও উল্লেখ আছে যে এ মন্দিরের অধিষ্ঠাতা দেবতা ছিলেন অবলোকিতেশ্বর, আর অধিষ্ঠাত্রী দেবী ছিলেন মহাতারা।
সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের মতে, এ বিহারের দুইজন স্বনামধন্য পন্ডিত হলেন দানশীল ও বিভূতিচন্দ্র। প্রায় ষাটখানা গ্রন্থের তিব্বতী অনুবাদ করেন আচার্য দানশীল। রাজপুত্র বিভূতিচন্দ্র ছিলেন একাধারে গ্রন্থকার, টীকাকার, অনুবাদক ও সংশোধক। জগদ্দল বিহারের আচার্য মোক্ষকর গুপ্ত তর্কভাষা নামে বৌদ্ধ ন্যায়ের উপর একটি পুঁথি লিখেছিলেন। শুভকর গুপ্ত , ধর্মাকর, প্রভৃতি মনীষী আচার্যরা কোন না কোন সময় এই মহাবিহারের অধিবাসী ছিলেন। কথিত আছে যে কাশ্মিরের প্রসিদ্ধ পন্ডিত শাক্যশ্রীভদ্র ১২০০ খ্রিস্টাব্দে বিভিন্ন বিহার দর্শন করে জগদ্দল বিহারে এসেছিলেন। বাংলার জগদ্দল বিহারের বৌদ্ধ পন্ডিত বিদ্যাকর সুভাষিত রত্নকোষ নামে একটি কোষকাব্য সংকলন সমাপ্ত করেছিলেন।
জগদ্দল মহাবিহারের দৈর্ঘ্য পূর্ব-পশ্চিমে ১০৫ মিটার, উত্তর-দক্ষিনে ৮৫ মিটার ও উচ্চতা ৫.৪০ মিটার। ১৯৯৭ সালে এই স্থান খননের মাধ্যমে একটি বিহারের আংশিক স্থাপত্য কাঠামো ও গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রত্নতত্ত্ব আবিষ্কৃত হয়। পরবর্তীতে ২০০০, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে জগদ্দল বিহারের ৩২ টির ও বেশী জায়গায় খনন করে অলংকৃত মূর্তি, ১৩৪ টি প্রত্নতত্ত্ব, ১৪টি ব্রোঞ্জের মূর্তি, পোড়া মাটির টেরাকোটা, ৩৩টি ভিক্ষু কক্ষ ও ৮x৮ মিটার প্রস্থের হলঘর পাওয়া গিয়েছে। আবার একমাত্র এই বিহার থেকেই ৬০ সে.মি পুরত্ব বিশিষ্ট বৌদ্ধ বিহারের ছাদের ভগ্নাংশ ও গ্রানাইট পাথরের পিলার উদ্ধার হয়েছে। এছাড়াও খননের মাধ্যমে আবিষ্কৃত ভিক্ষু কক্ষের প্রবেশ পথে অলংকৃত পাথরের চৌকাঠ, আবার কোথাও কোথাও দেবী কক্ষও দেখা যায়। জগদ্দল বিহার থেকে প্রাপ্ত মূল্যবান প্রত্ন সম্পদ গুলো বর্তমানে পাহাড়পুর জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
কিভাবে যাবেন?
নওগাঁ জেলা সদর থেকে মঙ্গল বাড়ী ধামইরহাট সড়ক দিয়ে হরতকী ডাঙ্গা হাট থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত জগদ্দল বিহারে লোকাল বাসে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
নওগাঁতে বেসরকারী আবাসন ব্যবস্থার মধ্যে হোটেল প্লাবন, হোটেল যমুনা, হোটেল অবকাশ, মল্লিকা ইন, হোটেল ফারিয়াল, হোটেল রাজ অন্যতম।
কোথায় খাবেন?
নওগাঁ জেলা শহরের গোস্তহাটির মোড়ে খাবারের জন্য বেশ কিছু ভালো মানের রেস্তোরা আছে।