ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলাধীন ৮ নং কুশুম্বা ইউনিয়নের কুশুম্বা গ্রামে অবস্থিত কুসুম্বা মসজিদ (Kusumba Mosque) প্রায় সাড়ে চারশত বছর পুরনো একটি ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি। নওগাঁ থেকে মসজিদটির দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এবং মান্দা উপজেলা থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪ কিলোমিটার। সুলতানি আমলের সাক্ষী কুসুম্বা মসজিদ এর ছবি বাংলাদেশের পাঁচ টাকার নোটে মুদ্রিত আছে।
মসজিদের প্রবেশদ্বারে বসানো ফলকে মসজিদের নির্মাণকাল লেখা রয়েছে হিজরি ৯৬৬ সাল (১৫৫৪-১৫৬০ খ্রিস্টাব্দ)। আফগানী শাসনামলের শুর বংশে শেষদিকের শাসক গিয়াসউদ্দিন বাহাদুর শাহের আমলে সুলায়মান নামে একজন এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। তিনি তৎকালীন কুশুম্বা গ্রামের চিলমন মজুমদার নামে একজন হিন্দু জমিদার ছিলেন। তিনি তার জমিদারির রাজস্ব পরিশোধে ব্যর্থ হলে একসময় কারাগারে বন্দী হন। অবশ্য পরে তিনি নিজের ইচ্ছায় সপরিবারে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং সোলায়মান খান নাম ধারণ করে বন্দিদশা থেকে মুক্তি লাভ করেন। কিছুকাল পর তিনিই নিজ অর্থ ব্যয়ে কুশুম্বা মসজিদের আংশিক বাকি নির্মাণকাজ শেষ করেন। প্রবেশপথ থেকে সামান্য দূরে বাক্স আকৃতির একটি কালো পাথর দেখা যায়, যা একটি শিশুর কবর হিসাবে লোকমুখে প্রচলিত আছে। তবে পাথরের গায়ে আরবি হরফে লেখা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় এই প্রস্তুরটি হুসেন শাহের স্মৃতি বিজড়িত।
চারকোণা কালো, ধুসর পাথর ও পোড়া মাটি দ্বারা নির্মিত কুসুম্বা মসজিদের দৈর্ঘ্য ৫৮ ফুট এবং প্রস্থ ৪২ ফুট। গ্রামীণ চালাঘরের আদলে তৈরী মসজিদের ছাদ উত্তর-দক্ষিণে ঈষৎ বক্র। মসজিদের চারপাশের দেয়াল প্রায় ৬ ফুট পুরু। মসজিদের মূল গাঁথুনি ইটের হলেও এর সম্পূর্ণ দেয়াল এবং ভেতরের খিলানগুলো পাথরের আস্তরণে ঢাকা। মসজিদের চারকোণে রয়েছে অষ্টাভুজাকৃতির ৪ টি সুন্দর মিনার বা বুরুজ। মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশের জন্য সামনের অংশে রয়েছে ৩ টি দরজা। এদের মধ্যে দুটি দরজা আকারে বড় এবং অন্যটি ছোট। কুসুম্বা মসজিদের মিহরাবগুলিকে পাথরের খোদাই করা নকশায় অলংকৃত করে তোলা হয়েছে এবং মসজিদের কিবলার দেওয়াল জুড়ে গোলাপের নকশা ফুতিয়ে তোলা হয়েছে।
কুশুম্বা প্রাচীনকালের একটি স্থানের নাম। মহাভারতে এটির নাম পাওয়া যায়। পাল রাজা রামপালের সভাকবি সন্ধ্যাকর নন্দী তার ‘রাম চরিতম’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, কুশুম্বা গ্রামটি সামন্ত রাজা দ্বোরপ বর্ধনের রাজধানী ছিল। কোনো কোনো ঐতিহাসিক বলেছেন, গৌড়ের সুলতান হোসেন শাহের ছেলে নাসির উদ-দীন নুসরত শাহের নির্দেশে এ মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। এর উত্তর-দক্ষিণ দিকে প্রায় ৭৭ বিঘা জমির উপর রয়েছে একটি বিশালাকার দীঘি। মসজিদের সামনে খোলা প্রাঙ্গণ থেকে একটি পাথর বসানো সিঁড়ি দীঘির পানি পর্যন্ত নেমে গেছে। প্রায় ১২০০ ফুট এবং ৯০০ ফুট চওড়া দীঘিটি গ্রামবাসী এবং মুসল্লিদের পানির চাহিদা পূরণে ব্যবহৃত হয়। ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে কুসুম্বা মসজিদটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ বর্তমানে এই মসজিদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী যে কোন বাসে চড়ে রাজশাহী-নওগাঁ হাইওয়ের কাছে কুসুম্বা মসজিদ দেখতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
নওগাঁতে বেসরকারী আবাসন ব্যবস্থার মধ্যে হোটেল প্লাবন, হোটেল যমুনা, হোটেল অবকাশ, মল্লিকা ইন, হোটেল ফারিয়াল, হোটেল রাজ অন্যতম।
কোথায় খাবেন?
নওগাঁ জেলা শহরের গোস্তহাটির মোড়ে খাবারের জন্য বেশ কিছু ভালো মানের রেস্তোরা আছে।