গৌরীপুর লজ | Gouripur Lodge 19/01/2022


PC:


এক সময় ময়মনসিংহ অঞ্চলে ছিলো রাজা-মহারাজা ও জমিদারদের বসবাস। দীর্ঘ সময় ধরে ওই অঞ্চল শাসন করার সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা। রাজা-মহারাজাদের শাসনামলে এ অঞ্চলে নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। তেমনি একটি হচ্ছে গৌরীপুর লজ (Gouripur Lodge)। অবস্থিত ময়মনসিংহ জেলা শহরের ব্রহ্মপুত্র নদের অদূরে ঈশান চক্রবর্তী রোডে। দ্বিতল বিশিষ্ট স্থাপনাটি এই অঞ্চলের অন্যান্য স্থাপনা থেকে একটু ভিন্ন, কারণ এটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে লোহা, টিন ও কাঠ।

 

ধারণা করা হয়, তৎকালীন ময়মনসিংহের মহারাজা শশীকান্ত সেন গৌরীপুরের রামগোপালপুরের জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীকে ব্রহ্মপুত্র নদের পাশে এক টুকরো জমি দান করেন। কিন্তু শর্ত জুড়ে দেন যে, এই জমিতে কোনো দালান তোলা যাবে না। পরবর্তীতে এই শর্ত মেনে ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় একটি কারুকাজ খচিত দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করেন। কিন্তু এতে ব্যবহার করেন সুদূর চীন থেকে আনা লোহা, টিন ও কাঠ। নির্মাণের পর তিনি এই বাড়ি উপহার হিসেবে তার জামাতাকে দান করেন। এবং নাম দেন গৌরীপুর লজ।

 

গৌরীপুরের রামগোপালপুরের রাজা যোগেন্দ্র কিশোর রায়ের নির্মিত বিদ্যাপীঠ, রঙিন কাঁচের কারুকার্যের প্রাসাদ, কৃষ্ণ মন্দির ও প্রাসাদের প্রধান সুরঙ্গ পথ যে কাউকে মুগ্ধ করে। প্রাসাদের প্রধান সুরঙ্গ থেকে একটু এগিয়ে গেলে দু’টি সিংহের মুখোমুখি অবস্থানে সিমেন্ট, চুন আর কাঁচ দিয়ে নির্মিত ঐতিহাসিক গৌরীপুর লজের সিংহ দরজা চোখে পড়ে। তখন ডানে-বামে পেছনে রাজপরিবার, অতিথি আর কর্মচারীদের জন্য তৈরি পৃথক পৃথক শান-বাঁধানো পুকুরঘাট ভ্রমণ পিয়াসীদের মনে জাগায় অদম্য কৌতূহল। কল্পনায় ভাসে তাদের আভিজাত্যের কথা।

 

সময়ের স্রোতধারায় এসব জীর্ণ স্থাপত্যকীর্তি এখনো কিংবদন্তি। আছে কালের সাক্ষী হয়ে। টিন, কাঠ ও লোহা দিয়ে সম্পূর্ণ এ দেশীয় পদ্ধতিতে রাজবাড়ীর আদলে তৈরি সুরম্য অট্টালিকা হলো গৌরীপুর লজ। ব্যালকনি, ড্রইং, ডাইনিংসহ ছোট-বড় প্রায় ২০টি কক্ষ আছে এ লজে। এ অট্টালিকার সামনে আছে মনোরম ফুলের বাগান। সঙ্গীতের সুমধুর রহস্য অনুসন্ধানে সচেষ্ট এ ব্যক্তির সঙ্গীত-পিপাসা নিবারণের জন্য আলাউদ্দিন আলী খাঁ, মুহম্মদ আলী খাঁ, হাফেজ আলী খাঁ, মুস্তফা খাঁ প্রমুখ সঙ্গীত বিশারদরা এসেছিলেন গৌরীপুর লজে। প্রায় ১ দশমিক ৩৬ একর জমির ওপর সবুজের সমারোহে, কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে গৌরীপুর লজ। বর্তমানে এ প্রাচীন অট্টালিকা সোনালী ব্যাংকের ময়মনসিংহ অঞ্চলের করপোরেট অফিস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

 

কিভাবে যাবেন?

মাসাকান্দা বাসস্ট্যান্ড, রেল ষ্টেশন অথবা শহরের ব্রীজ মোড়ে নেমে অটো বা রিক্সায় করে সহজেই পৌছে যাবেন গৌরীপুর লজে।

 

কোথায় থাকবেন?

ময়মনসিংহ শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল থেকে আপনার জন্য ভাল হোটেল বেছে নিতে পারেন। তাছাড়া ভরসা করতে পারেন ময়মনসিংহের আমির ইন্টারন্যাশনাল অথবা হোটেল মুস্তাফিজ এর উপর।

 

কোথায় খাবেন?

ময়মনসিংহ শহরে প্রেসক্লাব ক্যান্টিনের মোরগ পোলাওয়ের স্বাধ চেখে দেখতে পারেন। এছাড়া ভাল মানের খাবারের জন্য হোটেল ধানসিঁড়ি ও হোটেল সারিন্দার বেশ সুনাম রয়েছে।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?