ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
পাহাড়, নদী পরিবেষ্টিত শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় ঢেউফা নদীর তীরে অবস্থিত একটি অপূর্ব পর্যটন কেন্দ্র রাজার পাহাড় (Rajar Pahar)। রাজার পাহাড় নিয়ে বিভিন্ন কাহিনী প্রচলিত থাকলেও প্রাচীন রাজ বংশের সম্ভ্রান্ত কোন রাজার অবস্থানের কারণে যে এই রাজার পাহাড় নামের সৃষ্টি তা বুঝতে মোটেও অসুবিধা হয় না। গারো পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু রাজার পাহাড়ের চূড়ায় শতাধিক হেক্টর সমতল ভূমি রয়েছে। আকাশ ছোঁয়া বিশাল রাজার পাহাড়ের নৈস্বর্গিক দৃশ্য মনকে আরও প্রাকৃতিপ্রেমী করে তোলে।
জনশ্রুতি রয়েছে, প্রাচীনকালে এখানে এক স্বাধীন রাজ্য ছিল। যার রাজা ছিলেন অত্যন্ত প্রতাপশালী। পরে তার নামানুসারেই এ পাহাড়ের নাম হয় রাজার পাহাড়। এছাড়া রাজা পাহাড়ের বিভিন্ন কোনায় দেখা মেলে আম, কাঁঠাল, লিচু ও কলার বাগানের। স্থানীয়রা বলেন, অনেক আগে পাগলা দারোগা নামে জনৈক ব্যক্তি রাজার পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে বসবাস শুরু করেন। তিনি ১৯৮০ সালে মারা গেছেন কিন্তু তার ছেলে মেয়েরা এখনো ওই অঞ্চলে রয়ে গিয়েছেন। তারাই এ পাহাড়ের কোনায় গড়ে তোলেন বিভিন্ন ফলের বাগান। পরে স্থানীয় আদিবাসীরাও এসব ফলের বাগান করা শুরু করে।
পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে দেখা যায় আশপাশের কর্ণঝোড়া, মালাকোচা, দিঘলাকোনা, হারিয়াকোনা, চান্দাপাড়া, বাবেলাকোনাসহ ভারতের সীমান্ত এলাকা। পাহাড়ের পাশেই রয়েছে বাবেলাকোনায় গারো, হাজং, কোচ অধ্যুষিত আদিবাসীদের সংস্কুতির ভিন্নমাত্রায় বৈচিত্রপূর্ন্য জীবনধারা। প্রাকৃতিক বিরুপতা জংঙ্গল আর জন্তু জানোয়ারের মিতালীতে এ জনপদের চলমান জীবন সংগ্রামের বিরল দৃশ্য। আদিবাসীদের সংস্কৃতি, সংরক্ষন ও চর্চার কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে বাবেলাকেনা কালচারাল একাডেমি, যাদুঘর, লাইব্রেরী, গবেষনা বিভাগও মিলনায়তন এর নিদর্শন। বাবেলাকোনা গ্রামে উপজাতীদের কারুকার্য মন্ডিত ধর্মীয় গীর্জা, মন্দির, উপাসনালয় ও অসংখ্য প্রাকৃতিক নির্দশনের সমাহার। এখান থেকে আদিবাসীদের সম্পর্কে জানা যায় অনেক কিছুই। মিশনারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় হচ্ছে এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের চালচলন, কথাবার্তা, ও জীবন প্রনালী দর্শনার্থীদের আরো আকৃষ্ট করে। ওদের সংস্কৃতিতে রয়েছে ভিন্নতা। ওদের জীবন যেন প্রবাহিত ভিন্ন এক ধারায়। বর্তমানে কর্নঝোড়া ঢেউফা নদীর জোয়ারে কানায় কানায় ভরে ওঠে। এটি যেন পাহাড়ের কুল ঘেঁষা বিকল্প সমুদ্র সৈকত। এ পাহাড়ের পাশে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ভিশন, বিডিআর ক্যাম্প, বিট অফিস, কারিতাস ও রাবার বাগান। অপরূপ প্রকৃতি ও বাবেলাকোনায় আদিবাসী জনপদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও জীবনধারা এখানে আগত দর্শনার্থীদের সমানভাবে আকর্ষণ করে।
কিভাবে যাবেন?
রাজার পাহাড়ে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে শেরপুর শহরে আসতে হবে। শেরপুর থেকে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরে রয়েছে শ্রীবরদী উপজেলার কর্ণঝোরা বাজার। শেরপুর হতে স্থানীয় পরিবহণে (যেমন- বাস, সিএনজি, অটোরিক্সা) রাজার পাহাড় যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন?
সাধারণত ঢাকা থেকে দিনে এসে দিনেই মধুটিলা ইকোপার্ক দেখে ফিরে যেতে পারবেন। শেরপুর জেলায় ১৫০ থেকে ৫০০ টাকায় সাধারণ মানের গেষ্ট হাউজের পাশাপাশি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় হোটেল সম্পদ, কাকলী , বর্ণালী গেষ্ট হাউজ, ভবানী প্লাজা নামের বেশকিছু মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। শেরপুরে সড়ক ও জনপথ, সার্কিট হাউজ, এলজিইডি, এটিআই এবং পল্লী বিদ্যুৎ এর পৃথক পৃথক রেষ্ট হাউজ রয়েছে।
কোথায় খাবেন?
খাবার খেতে শেরপুর চলে আসা সবচেয়ে ভাল হবে। শেরপুর শহরের নিউ মার্কেট এলাকায় হোটেল শাহজাহান, হোটেল আহার এবং হোটেল প্রিন্সে যেতে পারেন।