গোয়ালদি মসজিদ | Goaldi Mosque 15/01/2022


PC:


নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলায় নির্মিত এক ঐতিহাসিক সুলতানি স্থাপনা হচ্ছে গোয়ালদি মসজিদ  (Goaldi Mosque)। সোনারগাঁও পৌরসভার গোয়ালদি গ্রামে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহর রাজত্বকালে তৈরি গোয়ালদি মসজিদটি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান। আলাউদ্দিন হোসেন শাহর সময়ে শিল্প, শিক্ষা এবং সাহিত্যে এই বাংলার অনেক উৎকর্ষ সাধিত হয়। একে স্থানীয়ভাবে গায়েবি মসজিদ নামে অভিহিত করা হয়।

 

সোনারগাঁয়ে হোসেন শাহর রাজত্বকালের যেসকল ঐতিহাসিক শিলালিপি পাওয়া যায় সেগুলোর মধ্যে এই মসজিদ-সংলগ্ন শিলালিপিটি অন্যতম। প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা, আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ বাংলার মসনদে আরোহণের পর ১৪৯৩-১৫১৯ খ্রিস্টাব্দের কোনো এক সময়ে আলাউদ্দিন শাহের একান্ত অনুগত মোল্লা হিজবর আকবর খাঁ এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। ভারতের গৌড়, পান্ডুয়া ও বাংলাদেশের অন্যান্য বিভিন্ন স্থানের ইমারতের মতো এই মসজিদের ভেতর ও বাইরের দেয়ালে পাথর এবং ইটের ওপর অসাধারণ আরব্য অলংকরণ লক্ষ করা যায়। এক গম্বুজবিশিষ্ট বর্গাকৃতির এ মসজিদটির প্রতিটি দেয়াল প্রায় ৩ মিটার চওড়া এবং এর চার কোনায় চারটি খিলান তৈরি করা হয়েছে। কষ্টিপাথরে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছে এর মেহরাব। মেহরাবের গায়ে ফুল, লতাপাতা আঁকা বিভিন্ন নকশা এবং আরবি লিপির অলঙ্করণ।

 

এটি মূলত অসাধারণ কালো পাথরের তৈরি। অন্য দুটি মেহরাব অবশ্য ইটের তৈরি। এই মসজিদটির টেরাকোটা নকশায় যেসব মোটিফ পাওয়া যায়, সোনারগাঁয়ের সুলতান গিয়াস উদ্দিন শাহর প্রস্তর নির্মিত সমাধিতেও তার লক্ষ করা যায়। এই মসজিদের পুরু ইটের পৃষ্ঠভাগ দারুণ এক টেরাকোটা অলংকরণ রীতিতে খোদাই করা। মোগল আমলে ঢাকায় রাজধানী স্থাপনের আগে সোনারগাঁয়ে বার ভূঁইয়া প্রধান ঈশা খাঁ, মুসা খাঁ ও এর আগের স্বাধীন সুলতানদের প্রধান রাজধানী ছিল। রাজধানী ও রাজসভার জন্য মনোরম ইমারত ছাড়াও মুসলিম শাসকেরা এখানে অসাধারণ সুন্দর সব মসজিদ, খানকা ও সমাধি নির্মাণ করেন।  বর্তমানে মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে। মসজিদটিতে একসঙ্গে ১৫-২০ জন মুসলি্ল নামাজ আদায় করতে পারেন।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকার গুলিস্তান থেকে দোয়েল, স্বদেশ কিংবা বোরাকের এসি বাসে করে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় নেমে ব্যাটারী চালিত অটোতে কিংবা রিকশায় করে ১০ থেকে ৩০ টাকা ভাড়ায় পানাম নগরীতে যেতে পারবেন। গুলিস্তান থেকে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় যেতে জনপ্রতি ৪০ থেকে ৬০ টাকা বাস ভাড়া লাগবে।

 

কোথায় থাকবেন?

ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো দেখে সন্ধ্যার মধ্যে পূনরায় ঢাকায় ফিরে আসা সম্ভব। তবে রাত্রিযাপনের প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জ শহরের হোটেল মেহরান, হোটেল সোনালি, হোটেল নারায়ণগঞ্জ, হোটেল সুগন্ধা, হোটেল সুরমা ও হোটেল রুপায়ন ইত্যাদিকে বেছে নিতে পারেন।

 

কোথায় খাবেন?

নারায়নগঞ্জ শহরে রেলগেট এলাকায় বেশ কিছু খাবারের হোটেল আছে। নারায়ণগঞ্জ শহরে মনির রেস্তোরা, নিরিবিলি রেস্টুরেন্ট, শাহী রেস্টুরেন্ট, নিউ ঘরোয়া, খাবার ঘর ও বিভিন্ন বিরিয়ানি হাউজের মতো স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?