ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
PC:Md Sultan
এককালের দাপুটে জমিদারদের বসবাসের বাড়িগুলোই বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসাবে খুঁজে পাওয়া যায়। কালের বিবর্তনে টিকে থাকা তেমনি এক শতবর্ষী জমিদার বাড়ি নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি (Murapara Jamidar Bari) বা মঠেরঘাট জমিদার বাড়ি। শীতলক্ষ্যা নদীর কোলঘেঁষে গড়ে উঠা এ জমিদার বাড়িটির নাম করন করা হয়েছে এই গ্রামের নাম থেকে।
১৮৮৯ সালে রাম রতন ব্যানার্জী এখানে জমিদারী প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন পুরান ঢাকার তাঁতী বাজারের ব্যবসায়ী। মতান্তরে ছিলেন নাটোরের রাজার এক বিশ্বস্ত কর্মচারী। তার সততার পুরস্কার হিসেবে তিনি মুড়াপাড়া এলাকায় বেশকিছু জায়গির সম্পত্তি লাভ করেন। মূল জমিদারীকে প্রসারিত করেন তার ছেলে বিজয় চন্দ্র ব্যানার্জী। তিনি জমিদারী পান ১৮৯৯ সালে। বিজয় বাবুর দুই ছেলে জগদীশ ও আশুতোশ। বড় ছেলে হওয়ার সুবাদে পরবর্তী জমিদার হন জগদীশ ব্যানার্জী। পরে ১৯০৯ সালে জগদীশ চন্দ্র ব্যানার্জি এ বাড়ির কাজ সুসম্পন্ন করেন। তিনি এ এলাকার ক্ষমতাধর জমিদার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় জগদীশ ব্যানার্জি এ দেশ ছেড়ে কলকাতায় চলে যান এবং বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। তারপর থেকে বাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।
প্রায় ১৭ দশমিক ৫০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির মূল দরজার সামনে দিয়ে বয়ে গেছে শীতলক্ষা নদী। উত্তর-দক্ষিণে লম্বা দুই তলা একটি দালানকে কেন্দ্র করে বিশাল আয়তনের এই বাড়ির সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করেই দেখা মেলে বড় খোলা প্রান্তর। হাতের বামে দুটো মন্দির কক্ষ, তার পেছনেই বিশাল আম বাগান। প্রান্তর পেরিয়ে গেলে বাঁধানো চারটি ঘাটবিশিষ্ট একটি পুকুর। কারুকার্যমন্ডিত ৯৫ টি কক্ষের মধ্যে রয়েছে বেশকিছু নাচঘর, আস্তাবল, মন্দির, ভাণ্ডার এবং কাচারি ঘর।
১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাড়িটি দখল নেন ও এখানে হাসপাতাল এবং কিশোরী সংশোধন কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু করেন। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে এখানে স্কুল এবং কলেজের কার্যক্রম পরিচালনা করা হত। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটির দায়িত্ব গ্রহণ করে সেটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন। বর্তমানে এটি মুড়াপাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নামে পরিচিত।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকার সায়েদাবাদ, গুলিস্তান বা যাত্রাবাড়ি বাস টার্মিনাল থেকে বাসে করে (মেঘলা, আসিয়ান বা গ্লোরি) করে ভুলতা বা রূপসী বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। নরসিংদী ও ভৈরবগামী বাসে ভুলতা এসে সেখান থেকে রিকশা বা সিএনজিতে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া দিয়ে সরাসরি মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়।
আবার অন্য পথে, কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে জনপ্রতি ৬০ টাকা ভাড়ায় কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত এসে। কাঞ্চন ব্রিজের কাছে জনপ্রতি ৪০ টাকা সিএনজি ভাড়ায় রূপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা ফেরিঘাটে পৌছে ফেরী পার হয়ে রিকশা বা অটো নিয়ে জমিদার বাড়িতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো দেখে সন্ধ্যার মধ্যে পূনরায় ঢাকায় ফিরে আসা সম্ভব। তবে রাত্রিযাপনের প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জ শহরের হোটেল মেহরান, হোটেল সোনালি, হোটেল নারায়ণগঞ্জ, হোটেল সুগন্ধা, হোটেল সুরমা ও হোটেল রুপায়ন ইত্যাদিকে বেছে নিতে পারেন।
কোথায় খাবেন?
নারায়নগঞ্জ শহরে রেলগেট এলাকায় বেশ কিছু খাবারের হোটেল আছে। নারায়ণগঞ্জ শহরে মনির রেস্তোরা, নিরিবিলি রেস্টুরেন্ট, শাহী রেস্টুরেন্ট, নিউ ঘরোয়া, খাবার ঘর ও বিভিন্ন বিরিয়ানি হাউজের মতো স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে।