সেন্টমার্টিন দ্বীপ | St. Martin's Island 02/05/2021


PC: Mujahid Sagar


আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল সেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারিকেল বৃক্ষের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু পবনের কোমল স্পর্শ যা বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন (St. Martin's Island)  প্রবাল দ্বীপের সৌন্দর্য বর্ণনার ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। জেলা শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ১৭ বর্গ কিলোমিটারের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন স্থানীয়রা ‘নারিকেল জিঞ্জিরা’ বলেও ডাকেন।

 

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের সৌন্দর্য বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। যার চারিদিকে শুধুই নীল সমুদ্র, তীরে বাঁধা নৌকা, সারি সারি নারকেলগাছ আর ঢেউয়ের ছন্দ, কখনো থেমে থেমে, কখনো আবার দমকা হাওয়ার স্পর্শ,এসবই সেন্টমার্টিন দ্বীপের মহাত্ম যা ছোট্ট এই দ্বীপটিকে করেছে অনন্য সুন্দর। বালু, পাথর, প্রবাল কিংবা জীব বৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য এক অনুপম অবকাশ কেন্দ্র এই প্রবাল দ্বীপ।বছর জুড়ে পৃথিবীর নানা দেশের বহু মানুষের ভিড় লেগে থাকে এখানে। দ্বীপে মানুষের জীবন ধারা, সমুদ্রের নীল পানির সঙ্গে অতুলনীয় মিতালি অন্য রকম ভালো লাগা তৈরি করে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার থেকে বাসে করে টেকনাফ যাওয়া যাবে। টেকনাফের জাহাজ ঘাটে গিয়ে আপনাকে সীট্রাকের টিকেট কাটতে হবে। ভাড়া ৪৫০-৫৫০ টাকা (ফেরতসহ)। টেকনাফ হতে সেন্টমার্টিনের দুরত্ব ৯ কিমি। উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে যেতে হয় এখানে। শীত মৌসুমে সাগর শান্ত থাকে তাই এই সময় এখানে যাওয়া অনেক বেশি নিরাপদ। এই পর্যটন মৌসুমে এখানে টেকনাফ হতে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত গ্রীন লাইনের ওয়াটার বাস, এল সি কুতুবদিয়া, কাজল, কেয়ারী সিন্দবাদ সহ বেশ কয়েকটি জাহাজ বা সী-ট্রাক চলাচল করে। সকাল ১০ টায় এই নৌযানটি সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায় এবং বিকাল ৩ টায় ফিরে আসে।

এছাড়াও ট্রলার ও স্পীড বোটে করে যাওয়া যায় সেন্ট মার্টিন’স। সী ট্রাক গুলো এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলাচল করে। এর পর বৈরি আবহাওয়ার কারণে প্রশাসন একে চলতে দেয় না। তবে যারা বৈরি মৌসুমে এডভেঞ্চার হিসেবে যেতে চান সেন্টমার্টিন তারা ট্রলার ভাড়া করে যেতে পারেন। তবে এই যাত্রাটি খুব একটা নিরাপদ নয়। সাধারণত দুর্ঘটনা ঘটে না, তবে ঘটে যেতে পারে। তাই সাবধান। কিন্তু উত্তাল সাগরের প্রকৃত রূপ দেখা কিংবা নির্জন দ্বীপে বসে বৃষ্টিস্নান করার লোভ যারা সামলাতে না পারেন তাদের জন্য ট্রলার ছাড়া বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই, ৮০০ টাকায় ট্রলার ভাড়া করা যাবে অথবা প্রতি জন ১০০ টাকা করে ভাড়া দিয়েও যাওয়া যাবে।

 

কোথায় খাবেন?

সেন্টমার্টিনের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ জিনিস হল ডাব যা একাধারে মিষ্টি ও সুস্বাদু। সেন্টমার্টিনে গেলে অন্তত একটা ডাব টেস্ট করা উচিত। যারা মাছ খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য সেন্টমার্টিন কোরাল, সুন্দরী পোয়া, ইলিশ, রূপচাঁদা, লবস্টার, কালাচাঁদা ইত্যাদি নানান ধরনের ও স্বাদের বাহার নিয়ে অপেক্ষা করছে। নিজের মত করে মাছ পছন্দ করে কিনে বারবিকিউ করার সুযোগ থাকে সব হোটেলেই। এছাড়া রিসোর্ট গুলোতেও নিজস্বভাবে বারবিকিউ করার ব্যবস্থা থাকে। আর যদি সুযোগ হয় তবে কুরা খেয়ে দেখতে পারেন (দেশী মুরগিকে কুরা বলে ডাকা হয়)। এখানে আরো রয়েছে অফুরন্ত লইট্টা, ছুড়ি, রূপচাঁদা, কাচকি ইত্যাদি জানাঅজানা শুঁটকি মাছের ভান্ডার।

এছাড়াও যেসব হোটেল ও রেস্তোরাঁতে গিয়ে খেতে পারেন তার কয়েকটি হল কেয়ারি মারজান রেস্তোরাঁ, বিচ পয়েন্ট, হোটেল আল্লার দান, বাজার বিচ, আসাম হোটেল, সি বিচ, সেন্টমার্টিন, কুমিল্লা রেস্টুরেন্ট, রিয়েল রেস্তোরাঁ, হাজী সেলিম পার্ক, সেন্টমার্টিন টুরিস্ট পার্ক, হোটেল সাদেক ইত্যাদি। তবে অবশ্যই একটু যাচাই করে নিবেন।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?