ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ সুন্দরবনকে (Sundarban) জীব ও উদ্ভিদ জাদুঘর বললেও কম বলা হবে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলার অংশ নিয়েই বাংলাদেশের সুন্দরবন। সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার, যা যৌথভাবে বাংলাদেশ ও ভারতে মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।
বাংলায় সুন্দরবন-এর আক্ষরিক অর্থ সুন্দর জঙ্গল বা সুন্দর বনভূমি। সুন্দরী গাছ থেকে সুন্দরবনের নামকরণ হয়ে থাকতে পারে, যা সেখানে প্রচুর জন্মায়। অন্যান্য সম্ভাব্য ব্যাখ্যা এরকম হতে পারে যে, এর নামকরণ হয়তো হয়েছে “সমুদ্র বন” বা “চন্দ্র-বান্ধে (বাঁধে)” (প্রাচীন আদিবাসী) থেকে। তবে সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে সুন্দরী গাছ থেকেই সুন্দরবনের নামকরণ হয়েছে।
সুন্দরবনের ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা ও বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল। রয়েল বেঙ্গল টাইগার সহ বিচিত্র নানান ধরণের পাখি, চিত্রা হরিণ, কুমির ও সাপসহ অসংখ্য প্রজাতির প্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে সুন্দরবন পরিচিত। এখানে রয়েছে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রাজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ সরীসৃপ এবং ৮ টি উভচর প্রাণী। সুন্দরী বৃক্ষের নামানুসারে এই বনের নাম সুন্দরবন রাখা হয়। জরিপ মোতাবেক ৫০০ বাঘ ও ৩০,০০০ চিত্রা হরিণ রয়েছে এখন সুন্দরবন এলাকায়। ১৯৯২ সালের ২১শে মে সুন্দরবন রামসার স্থান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
যা যা দেখবেনঃ
হাড়বাড়িয়া– এখানে প্রচুর বানর দেখতে পাবেন সেই সাথে সুন্দরী গাছ।
জামতলা সি বিচ– ভোরে শিপ থেকে নেমে ৩০ মিনিটের মত নির্জন বনের ভিতর ট্রেকিং করে যেতে হবে এই সি বিচে।বনের ভিতর চোখে পড়বে বাঘের পায়ের ছাপ। ২০১৮ সালের বাঘশুমারীর রিপোর্ট অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা আনুমানিক ১১৪ টি। ভাগ্য খুব বেশী ভাল না হলে বাঘের দেখা পাওয়াটা দুষ্কর। বিচে এসেই শুরুতেই যেটা নজরে আসবে সেটা হল সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা। যদিও সেটা এর সৌন্দর্যকে কোনভাবে ঢাকতে পারেনি। মনে হবে “Sometimes disaster brings it’s inner beauty”
কটকা অভয়ারণ্য– হাড়বাড়িয়া থেকে অনেকটা ন্যাচারাল লাগবে এই জায়গাটিতে। প্রচুর হরিণ দেখতে পাবেন এখানে। দল বেধে আসে এরা। চাইলে গাছের ডাল ভেঙে ওদের খাওয়াতে পারবেন। সেই সাথে দেখবেন বানর, বানরদের ফল খাওয়াতে পারেন। এখানে কোন প্রকার প্লাস্টিক সদৃশ বস্তু, বিস্কিটের প্যাকেট ফেলবেন না।
হিরণ পয়েন্ট– হিরণ পয়েন্ট যাওয়ার পথে দুপাশে কুমির দেখতে পাবেন। নেভি ক্যাম্প থাকার কারনে জায়গাটা ভালই উন্নত কিন্তু এইখানে ন্যাচারাল ভাবটা খুব কম।
দুবলার চর– নানা প্রজাতির মাছ – কাকড়া, শুটকির জন্যে দুবলার চর এর খ্যাতি আছে বেশ। বিকাল- সন্ধ্যার দিকে এখানে বাজার বসে, সেটি দেখে আসতে পারেন।
করমজল– অনেকটাই চিড়িয়াখানার ফ্লেভার। প্রথেই নজরে আসবে সুন্দরবনের ম্যাপ। কুমির, হরিণ দেখতে পাবেন। হরিণদের খাবার কিনে খাওয়াতে পারবেন। বন্দি অবস্থায় এদের দেখতে অনেকেরই ভাল নাও লাগতে পারে।
কিভাবে যাবেন?
খুলনা থেকে সুন্দরবন দেখতে হলে ৫০ কিলোমিটার দূরে মংলায় যেতে হবে। খুলনা থেকে মংলা যাওয়া প্রাইভেট গাড়ি ও বাস রয়েছে। মংলা ঘাট থেকে ট্রলার কিংবা লঞ্চ ভাড়া নিয়ে দুই ঘন্টায় সুন্দরবনের করমজল যেতে পারবেন। চাইলে সকাল বেলা খুলনা থেকে মংলা হয়ে সুন্দরবন দেখে সন্ধ্যায় খুলনা ফিরে আসতে পারবেন।
তবে সুন্দরবন দেখতে যাওয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হচ্ছে কোন ভাল ট্যুর কোম্পানির প্যাকেজ নিয়ে ঘুরতে যাওয়া। সুন্দরবন ভ্রমণ প্যাকেজের সাধারণ খরচ, খাবারের মান ও জাহাজের উপর নির্ভর করে একটি মাঝারি ধরনের ট্যুরে সাধারণত জনপ্রতি ৫০০০ থেকে ৮০০০ টাকা খরচ হয়। এক মাস আগে থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে বুকিং নিশ্চিত না করলে ভ্যাসেল পাওয়া কষ্টকর।
কোথায় থাকবেন?
সুন্দরবনের টাইগার পয়েন্টের কচিখালী, হিরণপয়েন্টের নীলকমল এবং কাটকায় বন বিভাগের রেস্টহাউজে থাকার জন্য ব্যবস্থা রয়েছে। নীলকমলে থাকতে চাইলে দেশি পর্যটকদের প্রতি কক্ষের জন্য তিন হাজার টাকা লাগবে আর বিদেশিদের জন্য পাঁচ হাজার টাকা। কচিখালী প্রতি কক্ষের জন্য লাগিবে তিন হাজার টাকা আর বিদেশিদের জন্য লাগবে পাঁচ হাজার টাকা। কটকাতে প্রতি কক্ষ নিতে দুই হাজার টাকা লাগবে এবং বিদেশিদের জন্য রুম প্রতি পাঁচ হাজার টাকা লাগবে।
বাগেরহাটে থাকার জন্য তেমন আবাসিক হোটেল ব্যবস্থা নেই। রেল রোডে মমতাজ হোটেলে সুযোগ সুবিধা কম থাকলেও সেবার মান তুলনামূলক ভাল, তবে খরচ একটু বেশি। এছাড়া মমতাজ হোটেলের আশেপাশে অন্য হোটেলগুলোতেঅ থাকার জন্য খোঁজ নিতে পারেন।
মংলায় থাকার জন্যে পর্যটন কর্পোরেশনের হোটেল আছে। পশুর বন্দরে পর্যটকদের থাকার জন্য কিছু সাধারণ মানের হোটেল আছে।
সাতক্ষীরা শহরে থাকতে চাইলে এখানে কিছু সাধারণ মানের হোটেল পাবেন। শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে এনজিও সুশীলনের রেস্টহাউস ও ডরমেটরিতে রাত্রি যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে।
খুলনা নগরীতে বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল রয়েল, ক্যাসেল সালাম, হোটেল টাইগার গার্ডেন, হোটেল ওয়েস্ট ইন্, হোটেল সিটি ইন, হোটেল মিলিনিয়াম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।