বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি | Tomb of Birshreshtha Ruhul Amin 17/01/2022


PC:


খুলনা জেলার রূপসা নদীর পূর্বপাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন সামরিক সর্বোচ্চ খেতাবে সম্মানিত বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোহাম্মদ রুহুল আমিন (Birshreshtha Ruhul Amin)। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাকিস্থানিদের হাত থেকে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে রূপসার খুলনা শিপইয়ার্ডের সামনে নিজের জীবনকে বিলিয়ে দেন তিনি। এরপর রুপসা নদীর পূর্বপাশে বাঘমারা গ্রামে নদীর পাশে তাকে দাফন করা হয়।

 

১৯৩৫ সালে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার বাঘপাঁচড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ রহুল আমিন। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয় সরকারের নৌ বাহিনীকে দেওয়া পলাশ গান বোর্ডের আর্টিফিশিয়াল অফিসার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। ১০ ডিসেম্বর হলদিয়া নৌঘাঁটি থেকে পাকিস্থানি নৌঘাটি পিএনএস তিতুমির দখলের জন্য মংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে পলাশ, পদ্মা ও পাভেল নামের তিনটি গান বোট রওনা দেয়। কিন্তু গানবোট পলাশ খুলনা শিপ ইয়ার্ডের খুব কাছাকাছি পৌঁছালে জঙ্গি বিমান হতে বোমা ও গুলি বর্ষণ শুরু হয়। পলাশের কমান্ডার সবাইকে গানবোট ত্যাগ করার নির্দেশ দিলেও রুহুল আমিন গান বোটকে সচল রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালান। হঠাৎ একটি গোলা পলাশের ইঞ্জিন রুমে আঘাত করে এবং তা ধ্বংস হয়ে যায়। বীরশ্রেষ্ট রহুল আমিন আহত অবস্থায় নদী তীরে পৌছালে পাড়ে অবস্থানরত পাকিস্থানি সেনা ও রাজাকাররা তাঁকে নির্মম ভাবে হত্যা করে।

 

পারিবারিক সূত্রমতে, রুহুল আমিনের লাশ তিন দিন রূপসা নদীর পাড়ে পড়ে ছিল। রূপসা থানার আব্দুর গাফফার গ্রামবাসীর সহযোগিতায় পূর্ব রূপসার চরে বাগমারা গ্রামে রুহুল আমিনকে কবরস্থ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা, অসামান্য বীরত্ব ও সর্বোচ্চ আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর মোহাম্মদ রহুল আমিনকে সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করা হয়।

 

দীর্ঘ ২৪ বছর পর ১৯৯৪ সালে “রূপসা রিপোর্টারস ক্লাব” ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর উদ্যোগে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন এবং বীর উত্তম শহীদ মহিবুল্লাহর সমাধি সংরক্ষণ ও রক্ষনাবেক্ষণের দায়িত্ব নেওয়া হয়। প্রতিবছর রুহুল আমিনের শাহাদাৎ বার্ষিকী ও সশস্ত্রবাহিনী দিবসে বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন নানা কর্মসূচির আয়োজনের মাধ্যমে রুহুল আমিনের সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকেন। বর্তমানে দেড় একর জায়গা নিয়ে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন এবং বীর বিক্রম মহিবুল্লাহর সমাধি কমপ্লেক্স নির্মিত হয়েছে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে ট্রেন, বাস বা লঞ্চে খুলনা আসা যায়। খুলনার রূপসা বাস স্ট্যান্ড থেকে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন সড়ক ধরে মাত্র ৫০ গজ সামনে এগিয়ে গেলেই বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের সমাধি দেখতে পাবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

খুলনা শহরের বেসরকারি আবাসনের মধ্যে টাইগার গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল ক্যাসেল সালাম, ওয়েস্টার্ন ইন, হোটেল হলিডে ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল মিলেনিয়াম ও সিটি ইন লিমিটেড উল্লেখযোগ্য।

 

কোথায় খাবেন?

খুলনা শহরের শিববাড়ী মোড়ে বেশকিছু ভালো রেস্টুরেন্ট আছে। খুলনা শহরে খাবারের মধ্যে সন্দেশ, ১ টাকার পুরি, কাচ্চি বিরিয়ানি ও গলদা চিংড়ি প্রসিদ্ধ।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?