ইনানী বিচ | Inani Beach
02/05/2021
সাজেক ভ্যালি | Sajek…
16/04/2021
চা বাগান | Cha Bagan
03/05/2021
রামু বৌদ্ধ বিহার | Ramu…
02/05/2021
02/05/2021
16/04/2021
03/05/2021
02/05/2021
হাওর, নদী আর মিঠাপানির জলাভূমির বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতির জন্য বিখ্যাত কিশোরগঞ্জ। চারদিকে শুধু থৈ থৈ পানির রাজ্য আর সবুজ শ্যামলিমা। কিশোরগঞ্জ জেল শহরের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রায় ৬০ কি: মি: দূরত্ত্বে অষ্টগ্রাম উপজেলার অবস্থান। অষ্টগ্রাম (Astagram) মূলত একটি হাওড় (Haor) বেষ্টিত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন উপজেলা। এমনকি শীতের সময়েও এখানে যেতে হলে নৌপথের সাহায্য নিতে হয়।
অষ্টগ্রাম উপজেলার উত্তরে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন ও ইটনা, দক্ষিণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছির নগর, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাছিরনগর উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলা, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর ও নিকলি উপজেলা অবস্থিত। বর্ষাকালে থৈ থৈ পানির বুকে এই গ্রামগুলোকে ছোট ছোট দ্বীপ মনে হয়। বর্ষাকালেই এর সৌন্দর্য মূলত ফুটে উঠে। দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি, জেলে জীবনের বহমানতা আর ছোট ছোট নৌকায় মানুষের আসা যাওয়া দেখতে দেখতে প্রকৃতির সাথে মায়াবী এক বাঁধনে আঁটকে পড়ে যাবেন যে কেউ সহজেই। জ্যোৎস্না রাতে চাইলেই ক্যাম্প করে থাকতে পারেন গ্রামের প্রান্তে কোন সুবিধা মতো জায়গায়। তখন এর সৌন্দর্য ধরা দেবে অন্য রকম ভাবে।
চারপাশে যে দিকে চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। উত্তাল বতাস, মাঝিদের গান, জেলেদের ব্যস্ততা, ছোট ছোট নৌকায় মানুষের যাতায়াত, সব কিছু মিলিয়েই চারপাশটা হয়ে উঠে দেখার মত। তবে শুধু বর্ষা নয়, যখন পানি নেমে যায় তখন ভিন্ন রূপে এই হাওর জেগে উঠে। এছাড়া বর্ষায় কিশোরগঞ্জের নিকলি তে প্রতি বছর নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তখন পুরো অঞ্চলেই উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। খোঁজ খবর নিয়ে গেলে আপনিও এই উৎসব দেখে আসতে পারেন।
কিভাবে যাবেন?
কিশোরগঞ্জ যাবার সবচেয়ে ভালো উপায় ট্রেন। এগারসিন্দুর প্রভাতি বুধবার ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৭ টায় কমলাপুর হতে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেন ভাড়া ১২০ টাকা। এছাড়া বাসে করেও যেতে পারেন। গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া হতে বি আর টি সি বাস যাতায়াত করে কিশোরগঞ্জের কুলিয়াচরে। কুলিয়ারচর নেমে একটা রিক্সা / ইজিবাইক নিয়ে চলে যান লঞ্চঘাট। লঞ্চঘাট হতে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত নিদৃষ্ট সময়ে লঞ্চ অষ্টগ্রামের উদ্দেশ্যে চলাচল করে।
কোথায় থাকবেন?
অষ্টগ্রামে থাকার জন্যে খুব ভাল মানের আবাসিক হোটেল নেই। প্রথম ও প্রধান জায়গা হলো জেলা পরিষদ ডাক বাংলো। রুম ভেদে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া। ডাক বাংলোতে থাকতে হলে আগে থেকেই যোগাযোগ করে যাওয়া ভালো। অষ্টগ্রাম বাজারে রংধনু আবাসিক হোটেল, মৌ-মিতু আবাসিক ও ঝলক আবাসিক হোটেল নামে তিনটি সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। রুম ভেদে ভাড়া লাগবে ১৫০ থেকে ৬০০ টাকা।
আর ক্যাম্পিং করতে চাইলে তাও পারবেন। তবে ক্যাম্পিং করার জন্যে ভালো একটা জায়গা নির্বাচন করার পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখবেন। প্রয়োজন হলে স্থানীয় মানুষের সাহায্য নিন।
কি খাবেন?
নিজেরা রান্না করতে চাইলে সকাল সকাল স্থানীয় বাজার থেকে কিনে নিয়ে রান্না করতে পারেন। অষ্টগ্রাম বাজারে অবস্থিত নাজির কিংবা প্রভাতি হোটেলে হাওরের তাজা মাছের বিভিন্ন পদের তরকারি পাওয়া যায়। সদ্য হাওর থেকে ধরে মাছের স্বাদ নিতে ভুলবেন না। অষ্টগ্রামে বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা পনির পাওয়া যায় তবে এর জন্য আপনাকে অন্তত এক-দুইদিন আগে স্থানীয় পনীর বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে পরিমাণ জানাতে হবে। শীতকালে অষ্টগ্রাম ভ্রমণে গেলে এখনকার বিখ্যাত প্রায় ১০ ইঞ্চি লম্বা মুরালি খেয়ে দেখতে পারেন।