নিকলী হাওর | Nikli Haor 13/01/2022


PC:


রাজধানী ঢাকার তীব্র যানজট আর অসহনীয় গরমের কথা তো নতুন কিছু নয়। সপ্তাহান্তে যখন ছুটি মেলে চাইলেই প্রকৃতির কাছাকাছি কোথাও গিয়ে দু দণ্ড জিরিয়ে নেয়ার জায়গা পাওয়া দায়। চারদিক নদী আর হাওর জলাশয় বেষ্টিত উপজেলা নিকলী (Nikli Haor) কিশোরগন্জ জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার পূর্ব দিকে তার অবস্থান। এখানে রোদা নদী, সোয়াইজনী, নরসুন্দা, ধনু আর ঘোরাউত্রা হাওরের পানিতে একাকার হয়ে সমদ্রের রূপ ধারণ করেছে।

 

শুকনো মৌসুম গুলোয় এখানে ধু ধু প্রান্তর আর ফসলী জমি দেখা যায় অথচ বর্ষা নামতেই চারিদিকে অথৈ জলরাশির হাতছানি। এই জলরাশির ফেরিয়ে মাঝেমধ্যে দেখা যায় সমুদ্রের বুকে এক খণ্ড দ্বীপের মতো ভেসে থাকা ছোট ছোট গ্রাম। এখানে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান হল কূর্শা থেকে মোহরকোনা বিস্তৃত ৭ কিলোমিটার ব্যাপী বেড়ীবাঁধ, কামালপুর থেকে দামপাড়া পর্যন্ত প্রতিরক্ষা বাঁধ, সোয়াইজনী ও নরসুন্দা নদীর ব্রীজ। হাওরের বিশাল জলরাশির মাজে দ্বীপ সদৃশ ডুবো গ্রাম সিংপুর, ঘোড়াদিঘা, ছাতির চর। গ্রাম আর বিস্তীর্ণ জলরাশির আছড়ে পড়া ঢেউ কেটে নৌকা যখন এগিয়ে যায় আর পাটাতনে দাঁড়িয়ে দিগন্তের বুকে দু হাত মেলে দাঁড়িয়ে থাকলে এক স্বপ্নালু ঘোর আচ্ছন্ন করবে। নৌকা নিয়ে একটু গভীরে গেলেই আর গ্রাম চোখে পড়বে না, সম্মুখে শুধুই দিগন্তের মায়াকাড়া সুর। অথচ বর্ষা কেটে যেতেই ক্রমে এখানে ফুটে উঠবে ধানের শিষ আর পথঘাট।

 

আবহমান বাংলায় বর্ষার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের যে চিত্রটি আমরা কল্পনা করি তার পরিপূর্ণ রূপটি পাওয়া যায় হাওর জনপদ নিকলীতে। এখান কার বেড়ীবাধের দৃশ্য কেবল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কথাই মনে করিয়ে দেয়।  রাতের হাওর বিচিত্র সৌন্দর্য বিলিয়ে দেয়। নিশুতি রাত, স্বচ্ছ জলে চাঁদের আঁচড়ে পড়া আলো আর নৌকার গাঁয়ে হাওড়ের অবিরাম জলকেলি ব্যতীত আর কোন সাড়াশব্দ কিংবা আলো চোখে পড়বে না। এ এক অপার সৌন্দর্য। এমনি এক ঘোরে রাত কাটিয়ে সকালে চোখে পড়বে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে জেলের দল মাছ ধরতে বেরিয়ে পড়েছে হাওড়ের বুকে। আর পানিতে সূর্যোদয়ের লাল আভার ছন্দবদ্ধ আবেগ।

 

নিকলী হাওর কিভাবে যাবেন?

যদি কিশোরগঞ্জ জেলা শহর থেকে নিকলী যেতে চান তবে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে ষ্টেশনের সংলগ্ন নিকলীগামী সিএনজি ষ্টেশনে চলে আসুন। কিশোরগঞ্জ সদর থেকে নিকলীর দূরত্ব প্রায় ২৭ কিলোমিটার। সিএনজি ষ্টেশন থেকে লোকালে বা রিজার্ভ নিয়ে নিকলী যেতে প্রায় ১ ঘন্টা সময় লাগে। লোকালে যেতে জনপ্রতি ভাড়া ৭০ টাকা আর সিএনজি রিজার্ভ নিতে ৩৫০-৪০০ টাকা ভাড়া লাগে।

 

নিকলী হাওর কোথায় খাবেন?

নিকলী এযেখানে নামবেন সেখানেই মোটামুটি মানের কয়েকটি খাবার হোটেল আছে। তার মধ্যে হোটেল সেতু, ক্যাফে ঢেউ উল্লেখযোগ্য। হাওরের তাজা মাছের নানা পদ দিয়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকায় ভরপেট খেয়ে নিতে পারবেন।

  

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?