সোনাকান্দা জলদূর্গ | Sonakanda Jaldurg 15/01/2022


PC:


রাজ রাজড়াদের আমলে যুদ্ধ কিংবা বহিঃশত্রুর আক্রমণ হতে রাজ্যকে সুরক্ষা দিতে এইসব দূর্গের বহুল ব্যবহারের কথা শুনা যায়। তন্মধ্যে একটি হচ্ছে নারায়নগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্বদিকে অবস্থিত প্রাচীন এক জল দুর্গের নাম সোনাকান্দা দুর্গ (Sonakanda Fort)। মূলত মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিহত করতে গুরুত্বপূর্ণ জল পথের ধারে এই সব দূর্গ নির্মাণ করা হয়। মোঘল আমলে নির্মিত ঢাকার অদূরেই দাঁড়িয়ে থাকা তিনটি দূর্গ যা ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্ট বা ত্রিভুজ জলদূর্গ হিসেবেই পরিচিত। এই ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্ট গুলো হলো নারায়ণগঞ্জের হাজীগঞ্জ দূর্গ, সোনাকান্দা জলদূর্গ, মুন্সীগঞ্জের ইদ্রাকপুর জলদূর্গ।

 

মোঘল আমলে নির্মিত এই কেল্লাকে ঘিরে নানা ধরনের কল্পকাহিনী প্রচলিত রয়েছে। কথিত আছে, রাজা কেদার রায়ের মেয়ে স্বর্ণময়ী লাঙ্গলবন্দে পুণ্যস্নান করাকালীন সময়ে একদল ডাকাত তাকে অপহরণ করলে বারো ভূইয়াদের অধিপতি ঈশা খাঁ তাকে উদ্ধার করে কেদার রায়ের কাছে ফেরত পাঠাতে চান। কিন্তু মুসলমানের তাবুতে রাত কাটানোর কারণে তার জাত গেছে এই অভিযোগ এনে স্বর্ণময়ীকে আর ফেরত নেয়া হয়নি। এরপর থেকে স্বর্ণময়ী ঈশা খাঁর তাবুতে থাকতেন। বিষয়টা মেনে নিতে পারেননি স্বর্ণময়ী তথা সোনা বিবি। তিনি নীরবে নিভৃতে দুর্গে বসে রাত-দিন কাঁদতে থাকেন। সেই থেকে দুর্গের নামকরণ হয় সোনাকান্দা।

 

দুর্গটিতে প্রবেশের জন্য উত্তর দিকে একটি বিশাল প্রবেশদ্বার রয়েছে। প্রবেশপথের মূল খিলান ছিল চতুষ্কেন্দ্রিক এবং চার কোণায় রয়েছে চারটি পার্শ্ব বুরুজ। খিলানযুক্ত এই প্রবেশপথটি একটি আয়তাকার ফ্রেমে আবদ্ধ এবং উভয়দিক পলেস্তরায় বিভিন্ন আকৃতির প্যানেল নকশায় সজ্জিত করা হয়েছে। সোনাকান্দা দুর্গের পার্শ্ব বুরুজগুলি অষ্টভুজাকার। এই দুর্গটিতে দুটি প্রধান অংশ রয়েছে। একটি অংশ বিশাল আয়তনের মাটির ঢিবিসহকারে গঠিত দুর্গপ্রাচীর দ্বারা সুরক্ষিত অংশ যার মধ্যে গোলা নিক্ষেপের জন্য বহুসংখ্যক প্রশস্ত-অপ্রশস্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র রয়েছে। অপর অংশটি দুর্গের অভ্যন্তরে পশ্চিমাংশে নির্মিত। বর্তমানে এই দুর্গটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তরের অধীনে একটি সংরক্ষিত নিদর্শন।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকার গুলিস্থান থেকে বাসে নারায়ণগঞ্জ যাওয়া যায়। নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নং লঞ্চ ঘাট থেকে নৌকা দিয়ে বন্দর উপজেলার ঘাটে নেমে রিকশায় সোনাকান্দা দুর্গে যেতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানগুলো দেখে সন্ধ্যার মধ্যে পূনরায় ঢাকায় ফিরে আসা সম্ভব। তবে রাত্রিযাপনের প্রয়োজনে নারায়ণগঞ্জ শহরের হোটেল মেহরান, হোটেল সোনালি, হোটেল নারায়ণগঞ্জ, হোটেল সুগন্ধা, হোটেল সুরমা ও হোটেল রুপায়ন ইত্যাদিকে বেছে নিতে পারেন।

 

কোথায় খাবেন?

নারায়নগঞ্জ শহরে রেলগেট এলাকায় বেশ কিছু খাবারের হোটেল আছে। নারায়ণগঞ্জ শহরে মনির রেস্তোরা, নিরিবিলি রেস্টুরেন্ট, শাহী রেস্টুরেন্ট, নিউ ঘরোয়া, খাবার ঘর ও বিভিন্ন বিরিয়ানি হাউজের মতো স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?