মধুপুর জাতীয় উদ্যান | Madhupur National Park 28/12/2021


PC:


PC:Omar Faruk 1158

মধুপুর জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের অন্যতম একটি জীববৈচিত্র্যপূর্ণ উন্মুক্ত উদ্যান। ঢাকা থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরত্বে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় অবস্থিত। শাল গাছ এই বনের প্রধান আকর্ষণ এবং ধারণা করা হয় এই বনাঞ্চল কয়েক’শ বছরের পুরাতন। মধুপুর জাতীয় উদ্যানটি ১৯৬২ সালে বন বিভাগের আওতাধীন আসে এবং ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী আইনের অধীনে বাংলাদেশ সরকার ১৯৮২ সালে মধুপুর বনকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে।

 

জাতীয় মধুপুর উদ্যানের আয়তন প্রায় ৮৪,৩৬৬ হেক্টর।  টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে ময়মনসিংহ যাবার পথে রসুলপুর মাজার নামক স্থানে গিয়ে বাঁপাশে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটকটি অবস্থিত। ফটকের পাশেই মধুপুর জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ অফিস ও সহকারী বন সংরক্ষকের অফিস অবস্থিত। আরও একটু সামনে ২৫ মাইল নামক স্থানে গিয়ে ডানদিকে ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দোখলা রেঞ্জ অফিস এবং দোখলা রেস্ট হাউজের অবস্থান। জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ময়মনসিংহ বন বিভাগের রসুলপুর রেঞ্জ কার্যালয় অবস্থিত। পাশেই আছে জলই রেস্ট হাউজ ও মহুয়া কটেজ।

 

প্রধান ফটক দিয়ে বনের মধ্যে ঢুকলে চোখে পড়ে শুধু শালবন আর সবুজের সমারোহ।  আছে নানান প্রজাতির লতাগুল্ম ও বৃক্ষরাজি, যার মধ্যে  বহেড়া, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বথ, বট সর্পগন্ধা, শতমূলী, জয়না, বিধা, আজুকি/হারগাজা, বেহুলা ইত্যাদি অন্যতম। সবুজ অরণ্যের প্রাকৃতিক দৃশ্যের পাশাপাশি মধুপুর জাতীয় উদ্যানে আছে প্রায় ১১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৭ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪ প্রজাতির উভচর এবং ৩৮ প্রজাতির পাখি। এর মধ্যে মুখপোড়া হনুমান, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, পেঁচা, কাঠ ময়ূর, বন মোরগ, লাল মুখ বানর, বন্য শুকর ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।আছে বিভিন্ন প্রজাতির পাহাড়ি আলু ও শটি।

 

জাতীয় মধুপুর উদ্যানে (Madhupur National Park) রয়েছে জুই ও চামেলী বাগান, দোখলা রেস্ট হাউজ, বকুল কটেজ, চুনিয়া কটেজ এবং দুটি পিকনিক স্পট। আরো আছে একটি ছোট্ট বাজার ও বেশকিছু আদিবাসী পল্লী। এছাড়াও এখানে আদিবাসীদের নিজস্ব তাঁতে তৈরী বিভিন্ন ধরণের রেশম বস্ত্রের কারিতাস নামে একটি বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। বনের ঠিক মাঝখানে আছে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র। লহরিয়া বিট অফিস সংলগ্ন এই কেন্দ্রে দেখতে পাওয়া যায় চোখ জুড়ানো চিত্রা হরিণের বিচরণ। সেখানেও হনুমানের সমারোহ সকলকে মুগ্ধ করবে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকা থেকে শুধুমাত্র সড়কপথে মধুপুর উদ্যানে যেতে হয়। ঢাকার মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে বিনিময় ও শুভেচ্ছা পরিবহন নামে দুটি বাস সার্ভিস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই রুটে চলাচল করে। এ দুটি পরিবহনের ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।

 

কোথায় থাকবেন?

ঢাকা থেকে সাধারণত দিনে গিয়ে দিনেই মধুপুর উদ্যান দেখে ফিরে আসা যায়। থাকার জন্য মধুপুর উদ্যানের ভেতরে দোখলা নামক স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে দোখলা রেস্ট হাউজ। এছাড়াও জলই, বকুল, মহুয়া ও চুনিয়া নামে আরো চারটি কটেজে অনুমতি নিয়ে থাকতে পারবেন। এই কটেজগুলোতে রাত্রিযাপনের সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে।

  

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?