নাগরপুর জমিদার বাড়ি | Nagarpur Zamidar Bari 27/12/2021


PC:


PC:Salim al mamun

ঊনবিংশ শতাব্দীতে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় জমিদার যদুনাথ চৌধুরী প্রায় ৫৪ একর জায়গার উপর নান্দনিক সৌন্দর্যে  কারুকার্যমণ্ডিত নাগরপুর জমিদার বাড়ী (Nagarpur Zamidar Bari) প্রতিষ্ঠা করেন। কথিত আছে, যদুনাথ চৌধুরী নাগরপুরকে কোলকাতার মতো করে সাজানোর পরিকল্পনা থেকেই নাগরপুর ও কোলকাতার নৌপথকে কেন্দ্র করে নাগরপুরে এই চৌধুরী বাড়ী নির্মাণ করেন। এখান থেকেই তিনি জমিদারি পরিচালনা করতেন। রঙ্গমহলের পাশে ছিল সুদৃশ্য চিড়িয়াখানা। সেখানে শোভা পেত- ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ, ময়না ইত্যাদি।

 

নির্মিত এই জমিদার বাড়ির শুরু থেকেই ক্রমান্বয়ে চৌধুরী বাড়ীর প্রথম পুরুষ যদুনাথ চৌধুরী ও তার বংশধর উপেদ্র মোহন চৌধুরী, জগদীন্দ্র মোহন চৌধুরী ও শশাঙ্ক মোহন চৌধুরী জমিদারীত্ব করতেন। নাগরপুর চৌধুরী বাড়ীর পূর্বে ধলেশ্বরী ও পশ্চিমে যমুনা নদী বয়ে চলেছে। উপেদ্র মোহন চৌধুরীর বড় ছেলে জমিদার সতীশ চন্দ্র চৌধুরী নাগরপুরে স্কুল, কলেজ, মন্দির, দাতব্য চিকিৎসালয়, খেলার মাঠ ও হাট বাজার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার সতীশ চন্দ্র চৌধুরীর জনহিতকর কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে “রায় বাহাদুর” খেতাবে ভূষিত করেন। 

 

পাশ্চত্য ও মোঘল সংস্কৃতির মিশ্রণে নির্মিত চার তলা বিশিষ্ট নাগরপুর জমিদার বাড়ীতে রয়েছে অসংখ্য ছোট বড় ঘর, যার অভ্যন্তরে সুদৃশ্য শ্বেত পাথরের ছিল লক্ষণীয়। চৌধুরী বাড়ীর অন্যান্য স্থাপনার মধ্যে মূল ভবন, নহবত খানা, অতিথিমহল, শৈল্পিক কারুকার্য মণ্ডিত তিল তালা বিশিষ্ট ঘোড়ার দালান, পূজা আর্চনার ঝুলন দালান, পরীর দালান ও রঙমহল বিশেষভাবে উল্লেখ্য। নাগরপুর চৌধুরী বাড়ীর সাথে অবস্থিত রঙমহলের পাশেই ছিল ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ ও ময়নার মতো বিভিন্ন প্রাণীতে সুসজ্জিত চিড়িয়াখানা। আর বাড়ীর দক্ষিণ দিকে ১১ একর জায়গার উপর “উপেন্দ্র সরোবর” নামের একটি দীঘি রয়েছে। দেশভাগের পরপর সতীশ চন্দ্র পরিবারসহ ভারতে চলে যান। বর্তমানে চৌধুরী বাড়ীর মূল ভবনে নাগরপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ স্থাপন করা হয়েছে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকার মহাখালি বা কল্যাণপুর থেকে টাঙ্গাইল কিংবা ধনবাড়ী গামী যেকোন বাসে চড়ে টাঙ্গাইল যেতে পারবেন। এরপর টাঙ্গাইল শহর থেকে সিএনজিতে নাগরপুর এসে অটো রিক্সায় ভাড়া নিয়ে নাগরপুর চৌধুরী বাড়ী যেতে পারবেন। নাগরপুর থেকে চৌধুরী বাড়ীর দূরত্ব মাত্র ৭ কিলোমিটার।

 

কোথায় থাকবেন?

ঢাকা হতে এক দিনেই নাগরপুর জমিদার বাড়ী দেখে ফিরতে পারবেন। যদি প্রয়োজনে রাত্রি যাপন করতে হয় তবে টাঙ্গাইল শহরের মসজিদ রোড ও নিরালা মোড়ে আল ফয়সাল, হোটেল প্রিন্স, ব্যুরো হোটেল, আযান রেসিডেন্সিয়াল, হোটেল প্যারাডাইস ইন, হোটেল সাগর ও হোটেল শান্তির মতো আবাসিক হোটেলে রাতে থাকতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

টাঙ্গাইলের নিরালা মোড়ে নিরালা ঘর, কবিরস ও নিউ তৃপ্তির মতো বেশ কিছু রেস্তোরা আছে। এছাড়া নাগরপুর বাজারে হালকা চা-নাস্তা করার ব্যবস্থা রয়েছে।

 

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?