পাকুল্লা মসজিদ | Pakulla Masjid 27/12/2021


PC:


PC:Ayman Hossain

টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার পালপাড়ায় পাকুল্লা বাজারের কাছে অবশিষ্ট তিন গম্বুজ বিশিষ্ট পাকুল্লা মসজিদ (Pakulla Masjid)। আনুমানিক ১৭শ শতকের শুরুর দিকে নির্মিত আয়তাকৃতির পাকুল্লা মসজিদের দৈর্ঘ্য ১৪.৭৭ মিটার, প্রস্থ ৫.৮৫ মিটার এবং মসজিদের দেয়ালগুলো ১.২৫ মিটার পুরু। পাকুল্লা মসজিদের অভ্যন্তরভাগ আড়াআড়ি খাঁজ খিলান দ্বারা তিনটি অসম ভাগে বিভক্ত। খিলানগুলি পূর্ব ও পশ্চিম দেয়ালের নিচ থেকে উত্থিত। এ ধরনের খিলানের সাদৃশ্য দিল্লিতে অবস্থিত আওরঙ্গজেব  এর মতি মসজিদ (আনু. ১৬৬২ খ্রি.), বর্ধমানে খাজা আনোয়ার শহীদের সমাধি (আ. ১৬৯৮ খ্রি.) এবং ঢাকার কাজী খাজা শাহবাজের মসজিদে (আনু. ১৬৭৯ খ্রি.) দেখা যায়। 

 

আয়তাকৃতির মসজিদের উভয় দিকে একটি করে দোচালা রীতির ইট ও পলেস্তরায় নির্মিত কক্ষ রয়েছে। মসজিদের সম্মুখে তিনটি প্রবেশ পথ আয়তাকৃতির প্যানেলের মধ্যে স্থাপিত এবং উপরে তিনটি গম্বুজ। চারকোণে চারটি অষ্টভুজাকৃতির পার্শ্ব বুরুজ ছাদের উপর পর্যন্ত উঠে গেছে। বুরুজগুলির উপরের ছত্রী এবং কুপোলা কলস ফিনিয়ালে সমাপ্ত হয়েছে। পার্শ্ব বুরুজ ও সংলগ্ন ক্ষুদ্র বুরুজগুলি কলস ভিত থেকে উত্থিত।

 

পশ্চিম দেয়ালের ভেতরে তিনটি অবতল মিহবার আছে। কেন্দ্রীয় মিহরাব চতুষ্ক্রেন্দ্রিক বহু খাঁজবিশিষ্ট এবং পার্শ্ব মিহরাবগুলি খাঁজবিহীন। কেন্দ্রীয় মিহরাব পার্শ্ব মিহরাবদ্বয় থেকে অপেক্ষাকৃত বড় এবং ঐতিহ্যগতভাবে বহির্দিকে বর্ধিত এবং উভয় দিকে জোড় স্তম্ভ রয়েছে। আর পার্শ্ববর্তী মিহরাবে একটি করে কলাম মিহরাবের উভয় পার্শ্বে দেখা যায়। কেন্দ্রীয় মিহরাবের উত্তর পাশে রয়েছে তিন ধাপ বিশিষ্ট মিম্বার। সুডৌল কন্দাকার গম্বুজ পদ্ম ফুল আচ্ছাদিত কলস ফিনিয়ালযুক্ত। মসজিদের প্যারাপেট দেয়াল ও গম্বুজের নিচে ড্রামের চারদিকে পদ্মপাপড়ির মেরলোন নকশা সম্বলিত। মসজিদ গাত্র খোপ নকশায় অলংকৃত। দরজার স্প্যানড্রিলে ও মিহরাবের সর্বত্র আকর্ষণীয়ভাবে পলেস্তরার স্ট্যাকো নকশায় পদ্মপাপড়ির মেরলোন, দড়ি, পাতা, জ্যামিতিক নকশায় ও অন্যান্য ফুলেল নকশায় অলংকৃত।

 

পাকুল্লা মসজিদে শিলালিপি না থাকায় এটি নির্মাণের তারিখ জানা যায় না। কিন্তু স্থাপত্য রীতির দিক দিয়ে অন্যান্য মধ্যযুগীয় তারিখযুক্ত খাজা আনোয়ার শহীদের সমাধি (আনু. ১৬৯৮ খ্রি.), মানিক পীরের দরগাহ (১৬৯৭), করতলব খান মসজিদ (১৭০৪ খ্রি.) ইত্যাদি ইমারতের সাথে মিল থাকায় পাকুল্লা মসজিদ সতেরো শতক অথবা আঠারো শতকের প্রারম্ভে নির্মিত বলে অনায়াসে ধরা যায়।

 

কিভাবে যাবেন?

পাকুল্লা মসজিদে যেতে হলে প্রথমে টাঙ্গাইল আসতে হবে। ঢাকার মহাখালি বা কল্যাণপুর থেকে টাঙ্গাইল কিংবা ধনবাড়ীগামী বাসে টাঙ্গাইল যেতে পারবেন। টাঙ্গাইল থেকে বাসে চড়ে ৪৩ কিলোমিটার দূরের দেলদুয়ার উপজেলায় পৌঁছে রিকশা বা ভ্যানে পাকুল্লা বাজার হয়ে পাকুল্লা জামে মসজিদে যেতে পারবেন।

 

কোথায় থাকবেন?

ঢাকা থেকে একদিনে টাঙ্গাইলের পাকুল্লা মসজিদ ঘুরে ফিরে আসতে পারবেন। প্রয়োজনে রাতে থাকতে চাইলে টাঙ্গাইল শহরে অবস্থিত হোটেল আল ফয়সাল, ব্যুরো হোটেল, আনসারি প্যালেস, হোটেল প্রিন্স, হোটেল শান্তি, যমুনা রিসোর্ট, এলেঙ্গা রিসোর্টের মতো হোটেল ও রিসোর্টে যোগাযোগ করতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

দেলদুয়ার উপজেলায় সাধারণ মানের খাবারের রেস্তোরাঁ রয়েছে। এছাড়াও টাঙ্গাইল শহরের নিরালা মোড়ে বিভিন্ন মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। টাঙ্গাইল শহরের জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে পাঁচআনি বাজারের পোড়াবাড়ি চমচম অন্যতম।

 

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?