বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর | Bangladesh Military Museum 04/01/2022


PC:


PC: MD SAIFUL AMIN

বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে পূর্ণাঙ্গ সামরিক বাহিনী গঠন করা হয়। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানার এক অন্যোন্য তথ্যভাণ্ডারের নাম বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর (Bangladesh Military Museum)। ১৯৮৭ সালে ঢাকার মিরপুর সেনানিবাসের প্রবেশদ্বারে প্রথম সামরিক জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সামরিক জাদুঘরের গুরুত্ব এবং দর্শকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১৯৯৯ সালে জাদুঘরটি স্থায়ীভাবে ঢাকার বিজয় সরণিতে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের পশ্চিম পাশে স্থানান্তর করা হয়।

 

জাদুঘরের সামনে মাঠে রাখা ২৬টি বিভিন্ন মডেলের ট্যাংকসহ আরো অনেক গাড়ি দেখতে পাওয়া যাবে। সামরিক জাদুঘরের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই সামনে ট্যাংক পিটি-৭৬। রাশিয়ার তৈরি এই ট্যাংকটি পানিতেও ভেসে চলতে সক্ষম। এই ট্যাংকটি ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকা থেকে বাংলাদেশ বাহিনী কর্তৃক পাকিস্তান দখলদার-বাহিনীর নিকট হতে উদ্ধার করা হয়।

 

বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরের মূল ভবনে ৮টি ভিন্ন ভিন্ন গ্যালারী রয়েছে। এদের মধ্যে চারটি গ্যালারীতে তীর, ধনুকসহ আদিম যুগের অস্ত্র থেকে শুরু করে ডিবিবিএল গান, এসবিবিএল গান, বিশেষ ব্যক্তিদের ব্যবহৃত হাতিয়ার, এলএমজি, এসএমজি, মর্টার, স্প্যালো, এইচএমজি সহ বিভিন্ন অস্ত্র সর্ব সাধারণের প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে। পঞ্চম গ্যালারিতে স্থান পেয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর শীত ও গ্রীষ্মকালীন পোশাক-পরিচ্ছদ, র‍্যাঙ্ক, ব্যাজ, ফিতা ইত্যাদি। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ দলিল, সেক্টর কমান্ডারগণের পোর্ট্রেট, কিছু ব্যবহার্য বস্তু  ইত্যাদি প্রদর্শিত হচ্ছে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক ষষ্ঠ গ্যালারিতে। সপ্তম গ্যালারিতে নাম দেয়া হয়েছে ‘বিজয় গ্যালারি’। এতে সশস্ত্র বাহিনীর যেসব ব্যক্তি মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছেন সেসব বীরশ্রেষ্ঠদের পোর্ট্রেট ও সংক্ষিপ্ত জীবনী প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং অষ্টম গ্যালারিতে রয়েছে প্রাক্তন সকল সেনাপ্রধানের তৈলচিত্র, বীরশ্রেষ্ঠ-বীরপ্রতীকদের নামীয় তালিকা ইত্যাদি।

 

জাদুঘর ভবনের নীচতলায় প্রদর্শিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী যে গাড়িটি নিয়ে বিভিন্ন যুদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেন সেই জিপ গাড়িটি। সামরিক জাদুঘরের নীচ তলায় পশ্চিম পাশের কক্ষে একাংশে সম্প্রতি স্থাপন করা হয়েছে মুজিব কর্নার। এখানে স্বাধিকার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ৩০টি আলোকচিত্র অঙ্কিত আছে। এই জাদুঘরটি পরিদর্শনের মাধ্যমে আমাদের সামরিক বাহিনীর ইতিহাস, সাফল্য ও গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

 

বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে প্রবেশের জন্য কোন প্রকার ফি প্রদান করতে হয় না। বুধ ও শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৫ দিন গ্রীষ্মকালীন সময়ে সকাল ১০ টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিট এবং শীতকালীন সময়ে ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত জাদুঘর উন্মুক্ত থাকে।

 

কিভাবে যাবেন?

ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বাস, সিএনজি কিংবা ট্যাক্সি ভাড়া করে বিজয় সরণিতে অবস্থিত বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর যেতে পারবেন। এছাড়া সুবিধাজনক উপায়ে ফার্মগেট অথবা চন্দ্রিমা উদ্যানের সামনে নেমে রিক্সা চড়ে বা পায়ে হেঁটে বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘর পৌঁছাতে পারবেন।

 

 

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?