লোহাগাড়া চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য | Chunati Wildlife Sanctuary 02/05/2021


PC:


কর্মব্যস্ত জীবনের ফাঁকে একটু প্রশান্তি খুঁজে পেতে প্রকৃতির সবুজে ঘেরা সৌন্দর্যের বিকল্প নেই। বুনো সৌন্দর্যের মাঝে নিজেকে হারাতে তাই প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে যান পাহাড়-অরণ্যে। দক্ষিণ পূর্ব উপমহাদেশীয় জীববৈচিত্র্যের বিশাল সমৃদ্ধ বনাঞ্চল নিয়ে গঠিত এবং এশিয়ান হাতি প্রজননের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল চট্টগ্রাম জেলা শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে লোহাগাড়ার চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক অপরূপ লীলাভূমি।

 

১৯৮৬ সালে সাতকানিয়া, চকরিয়া, বাঁশখালী ও লোহাগাড়াসহ ৭টি বনভূমি অঞ্চলের প্রায় ১৯,১৭৭ একর (৭,৭৬৪ হেক্টর) জায়গা জুড়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে অভয়ারণ্যের উল্লেখযোগ্য প্রাণী এশিয় হাতি ছাড়া বন্য শুকর, বানর, হনুমান, মায়া হরিণ, সাম্বার সহ ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী ও চার প্রজাতির উভয়চর প্রাণী, সাত প্রজাতির সরীসৃপ, ৫৩ প্রজাতির পাখি এবং ১০৭ প্রজাতির সুসজ্জিত বৃক্ষরাজির সমন্বয়ে গঠিত চিত্রহরিৎ বিশাল বনভূমি। বৃক্ষের সৌন্দয্যের সমন্বয়, উঁচু-নিচু পাহাড়ে সৃজিত বাগান আর বাগানে পাখিদের মিষ্টি সুরে মুখরিত অভয়ারণ্যটি বর্তমানে একটি আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র।

 

সংশ্লিষ্ট বিভাগের তথ্য মতে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এ বনাঞ্চল ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ মুক্তিযোদ্ধাদের পুর্নগঠনে গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ১৯৯২ সালে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের অধীনে প্রকল্পের কাজ শুরু করলে এখানে বনাঞ্চল সুরক্ষা, বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল উন্নয়ন, শিক্ষা, গবেষণা ও চিত্তবিনোদনের সুযোগ সৃষ্টির জন্য ২০০৩ সালে এলাকায় চুনতি ও জলদী রেঞ্জের অধীনে ৭টি বিট অফিস স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে পর্যটকদের কাছে আরো আকর্ষণীয় করার জন্য অভয়ারণ্য এলাকায় বনপুকুর, প্রাকৃতিক গর্জন বনাঞ্চল, এশিয় বন্যহাতির অবাধে বিচরণ, গয়ালমারা প্রাকৃতিক হ্রদ, বনপুকুর ফুটট্রেইল, জাঙ্গালীয়া ফুটট্রেইল, পর্যটন টাওয়ার, গোলঘর, ষ্টুডেন্ট ডরমিটরী, নেচার কনজারভেশন সেন্টার, গবেষণা কেন্দ্র, ইকোকর্টেজসহ বিভিন্ন প্রতিবেশ পর্যটন বা ইকোট্যুরিজম স্থাপন করা হয়।

 

২০১২ সালে এ অভয়ারণ্য জাতিসংঘের ইকুয়েটর পুরস্কার লাভ করে। বৃক্ষের সৌন্দর্যের সমন্বয়, উঁচু-নিচু পাহাড়ে সৃজিত বাগান আর বাগানে পাখিদের মিষ্টি সুরে মুখরিত থাকা অভয়ারণ্যটি প্রায় ৪৭৭ প্রজাতির বারো লাখেরও বেশি গাছ নিয়ে সৃষ্ট। রয়েছে বেশ কিছু শতবর্ষী গর্জন গাছ। এছাড়াও শাল, সেগুন, আকাশমণি, গর্জন, বট, হারগোজা, চাঁপালিশ, হরিতকি, বহেরা, বাঁশ, আসাম লতা, ছন প্রভৃতি উদ্ভিদ বেশি দেখা যায়। বর্তমানে সংরক্ষিত বন এলাকায় ভ্রমণের জন্য ৮ জন প্রশিক্ষিত ট্যুরগাইড সার্বক্ষণিক নিয়োজিত আছে।

 

কিভাবে যাবেন?

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া বাজার থেকে স্থানীয় পরিবহণে চড়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে যাওয়া যাবে। চাইলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়েও চুনাতি অভয়ারণ্যে যেতে পারবেন। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম শহরের বহদ্দারহাট ও অক্সিজেন মোড় থেকে কক্সবাজার যাওয়ার বাসে লোহাগাড়া নামতে হবে।

 

কোথায় খাবেন?

চট্টগ্রামে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা, হান্ডির নাম, গলফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোষ্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট রয়েছে।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?