কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি | Commonwealth War Cemetery 02/05/2021


PC:


চট্টগ্রামের ইতিহাস সম্বলিত দেখার মত এক জায়গা হল কমনওয়েলথ ওয়ার সিমেট্রি। চট্রগ্রামের মেহেদীবাগ গোল পাহাড় এলাকার বাদশা মিয়া রোডে অবস্থিত এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের সমাধিস্থল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আজাদ হিন্দ ফৌজের আক্রমণে নিহত মিত্রবাহিনীর সৈনিকদের এখানে সমাহিত করা হয়।

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তি সময়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এই সমাধিসেৌধ প্রতিষ্ঠা করে। সূচনালগ্নে এখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সৈন্যদের প্রায় ৪০০টি সমাধি ছিলো। তবে বর্তমানে এখানে ৭৫৫টি সমাধি বিদ্যমান যার ১৭টি অজানা ব্যক্তির। এই নাগরিকদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৩৭৮ জন, কানাডার ২৫ জন, অস্ট্রেলিয়ার ৯ জন, নিউজিল্যান্ডের ২ জন, অবিভক্ত ভারতের (বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান) ২১৪ জন, পূর্ব আফ্রিকার ১১ জন, পশ্চিম আফ্রিকার ৯০ জন, বার্মার ২ জন, নেদারল্যান্ডসের ১ জন ও জাপানের ১৯ জন। এছাড়াও এখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) চট্টগ্রাম-বোম্বের একটি স্মারক বিদ্যামান।

 

যুদ্ধ চলাকালীন সময় সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং ১৫২ নং ব্রিটিশ জেনারেল হাসপাতালের সুবিধার কারণে চট্টগ্রামে মিত্র বাহিনী চতুর্দশ সেনাবাহিনীর এই পথিকৃৎ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। হাসপাতালটি ডিসেম্বর ১৯৪৪ থেকে অক্টোবর ১৯৪৫ পর্যন্ত সক্রিয় ছিলো। এর মূল গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে সমাধিগুলোর মাঝখানে বিশালাকারের একটি ক্রুশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। ফটকের দুই দিকে লাল ইটের গাঁথুনি ও কাঠের ছাউনির ছোট্ট দুটি দোচালা কুটির। দক্ষিণ পাশের কুটিরে সংরক্ষিত রয়েছে মেমোরিয়াল বুক। এখানে বিশ্বযুদ্ধের বাণিজ্যিক নৌবহরে যে সাড়ে ৬ হাজার নাবিকের সলিল সমাধি হয় তাদের নাম-পদবি লেখা রয়েছে। পূর্ব দিকে চোখে পড়ে ছোট একটি প্রার্থনা ঘর । সেখানে দেখতে পাবেন বাংলা ও ইংরেজিতে তৎকালীন ইতিহাস ও মানচিত্র। প্রাথমিকভাবে এই সমাধিতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রায় ৪০০ মৃতদেহ সমাহিত করা সম্ভব হলেও যুদ্ধ শেষে অতিরিক্ত মৃতদেহ লুসাই, ঢাকা, খুলনা, যশোর, কক্সবাজার, ধোয়া পালং, দোহাজারি, রাঙ্গামাটি, পটিয়া এবং অন্যান্য অস্থায়ী সমাধিস্থান থেকে এই সমাধিস্থানে স্থানান্তর করা হয়।

 

চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রি সপ্তাহে ৭ দিনই দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে দুপুর ১২ টা এবং দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয়। এছাড়া বৃষ্টির সময় এবং যেদিন সেমিট্রিতে ঔষুধ প্রদান করা হয় সেদিন ওয়ার সেমিট্রিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।

 

কিভাবে যাবেন?

চট্টগ্রাম শহরের যেকোন স্থান থেকে জিইসি মোড় (জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানি) এসে সেখান থেকে রিক্সা নিয়ে নিজাম রোড হয়ে সহজেই চট্টগ্রাম ওয়ার সিমেট্রিতে পৌঁছাতে পারবেন।

 

কোথায় খাবেন?

যদি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার চেখে দেখতে চান তবে যেতে পারেন হোটেল জামান-এ। আর মেজবানি খাবারের জন্য যেতে পারেন চকবাজারে অবস্থিত “মেজবান হাইলে আইয়্যুন” রেস্তোরায়। এছাড়াও চট্টগ্রাম শহরে ছড়িয়ে আছে বেশকিছু ভাল মানের রেস্টুরেন্ট এদের মধ্যে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা, হান্ডি, গলফ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, কোষ্টাল মারমেইড রেস্টুরেন্ট এন্ড লাউঞ্জ, বোনানজা পোর্ট রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

You might like

Get the mobile app!

Our app has all your booking needs covered: Secure payment channels, easy 4-step booking process, and sleek user designs. What more could you ask for?